সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান করোনা আতঙ্কের মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে একাধিক ভ্যাকসিন। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে অন্তত গোটা ছয়েক ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে আছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুর দিকেই বাজারে করোনার প্রতিষেধক চলে আসতে পারে। কিন্তু সেখানেও দেখা যাচ্ছে অন্য এক আশঙ্কা। চিরাচারিত ধনী-গরিবের ব্যবধান।
রাশিয়া, আমেরিকার মতো বিত্তবান দেশগুলি ইতিমধ্যেই টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির পিছনে কোটি কোটি টাকা ঢালছে। পিছিয়ে নেই ব্রিটেন, ফ্রান্স, ভারতও। এই দেশগুলি চায় করোনার টিকা আবিষ্কার হলে, তার সিংহভাগের অধিকার যেন তাদের হাতেই থাক। ইতিমধ্যেই আমেরিকা দুটি সংস্থাকে মোটা অঙ্কের অনুদান দিয়েছে। Moderna Inc এবং Pfizer Inc নামের সংস্থাদুটির সঙ্গে তাঁরা চুক্তিও করে ফেলেছে।একইভাবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, তাদের তৈরি বেশিরভাগ ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হবে ভারতেই। এই প্রবণতাকে WHO বলছে, ‘প্রতিষেধক জাতীয়তাবাদ’ (Vaccine nationalism)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, বিশ্বের ধনী দেশগুলি যদি করোনার সব ভ্যাকসিন কিনে নেয়, তাহলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। আর করোনা যেহেতু মনুষ্য শরীর থেকেই সংক্রমিত হয়, তাই যতদিন না সব দেশে সমানভাবে ভ্যাকসিন বণ্টন সম্ভব হবে, ততদিন কোনও দেশ থেকেই এই মহামারী (CoronaVirus) পুরোপুরি নির্মূল করা যাবে না। তাই সবার আগে ধনী দেশগুলিকে করোনার টিকা নিয়ে এই ‘স্বার্থপরতা’ কমাতে হবে। ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে সেটাকে কুক্ষিগত করে রাখা চলবে না।
শুক্রবার এক ভারচুয়াল অনুষ্ঠানে WHO’র ডিরেক্টর-জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস (Tedros Adhanom Ghebreyesus) বলছিলেন, “ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। এতে কাজের কাজ কিছুই হবে না। দ্রুত বিশ্বকে এই ভাইরাস থেকে মুক্ত করতে হলে, সবাই মিলে একসঙ্গে সুরক্ষিত হতে হবে। কারণ এটা বিশ্বায়নের পৃথিবী। আর প্রত্যেকটি দেশের অর্থনীতি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চল বা দেশ তো সুরক্ষার স্বর্গ হয়ে উঠতে পারে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.