সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েলি সেনার আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লার। শনিবার ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের তরফে এমনই দাবি করা হয়েছে। বেইরুটে হেজবোল্লার সদর দপ্তরে হামলায় মৃত্যু হয়েছে নাসরাল্লার। কুখ্যাত এই জঙ্গি আর বিশ্বকে ভয় দেখাতে পারবে না বলে নিজেদের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছে ইজরায়েলি সেনা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, জঙ্গি নেতা হিসেবে কতটা ভয়ংকর ছিল হেজবোল্লা প্রধান? কে এই নাসরাল্লা?
দক্ষিণ লেবাননের বাজৌরিয়ে গ্রামে ১৯৬০ সালের ৩১ আগস্ট জন্ম হাসান নাসরাল্লার। ফতিমা ইয়াসিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সন্তান পাঁচজন। ইরাক ও ইরানের লেবাননে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুদের কাছে ধর্মীয় শিক্ষা পাওয়ার পর শিয়া মুভমেন্ট ‘আমাল’–এ যোগ দেয় সে। ক্রমে গঠিত হয় ‘ইসলামিক আমাল’। এই দলটিই পরবর্তী সময়ে হেজবোল্লা তৈরি করে। ১৯৮৫ সালে প্রথম নিজেদের অস্তিত্ব সম্পর্কে সকলকে জানায় তারা। জানিয়ে দেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন (আজকের রাশিয়া) ও আমেরিকাই ‘ইসলামের প্রধান দুই শত্রু’। পাশাপাশি ইজরায়েলকে ধ্বংসের হুমকিও দিতে থাকে তারা।
১৯৯২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হেজবোল্লার সেক্রেটারি জেনারেল হয়ে ওঠে নাসরাল্লা। আর তার নেতৃত্বেই ইজরায়েলের উপরে লাগাতার হামলা চালাতে থাকে হেজবোল্লা। যার জেরে ২০০০ সালে দক্ষিণ লেবাননের দখল করা অংশ ছেড়ে চলে যায় ইজরায়েলি সেনা। ২২ বছর ওই অঞ্চল তাদের দখলে ছিল। এর ফলে দক্ষিণ লেবাননে নেতা হিসেবে বিরাট জনপ্রিয়তা পায় নাসরাল্লা।
২০০৪ সালে ইজরায়েলের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বন্দি প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে নাসরাল্লা। শয়ে শয়ে লেবানিজ ও আরব বন্দিরা সেই সময় মুক্ত হয়। ২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধের পর ‘লিডার অফ রেজিস্ট্যান্স’ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত হতে থাকে তার নাম। প্যালেস্তিনীয়দের সমর্থনে তার আগুনে ভাষণ দিনে দিনে জনপ্রিয় হতে থাকে। যদিও ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় বিরোধী শক্তিদের সমর্থন না করে সিরিয়ার শাসকদের সমর্থন করায় সেই জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়তে থাকে। কিন্তু বরাবরই প্যালেস্টাইনের হয়ে সুর চড়িয়েছে সে। ফলে গ্রহণযোগ্যতা কখনওই কমেনি। এহেন নেতার মৃত্যুতে হেজবোল্লা বিরাট ধাক্কা খেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.