সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন সেনা সরতেই প্রায় গোটা আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করে ফেলেছে তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠী। আশরাফ ঘানি সরকারের পতন ঘটেছে। খুব শীঘ্রই শরিয়ত আইন মেনে নয়া তালিবান সরকার প্রতিষ্ঠার কাজও জোরকদমে চলছে। আগামিদিনে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে আফগানিস্তানের? সেই নিয়েই চলছে আলোচনা। এই পরিস্থিতিতে এবার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলল তালিবানের অন্যতম শীর্ষ নেতা শের মহম্মদ আব্বাস স্তানেকজাই। তার মন্তব্য, উপমহাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভারত। আর ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ আগের মতোই অব্যাহত রাখবে তালিবানশাসিত আফগানিস্তান।
শনিবার তালিবানের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ৪৬ মিনিটের ভিডিও পোস্ট করা হয়। তাতে গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বিবৃতি দিয়ে প্রথমবার তালিবানের কোনও শীর্ষ নেতা ভারত নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে। ওই ভিডিয়োয় স্তানেকজাই বলেছে, “উপমহাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভারত। অতীতের মতো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।” সেই সঙ্গে স্তানেকজাই যোগ করেছেন, “পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে ভারতের সঙ্গে যে বাণিজ্য চলে, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে আকাশপথে বাণিজ্য করিডরও খোলা থাকবে।”
তবে তালিবান নেতা স্পষ্টভাবে জানায়নি যে পাকিস্তানের মাধ্যমে দ্বিমুখী বাণিজ্য চলবে কিনা। এমনিতে পাকিস্তানের ভূখণ্ড দিয়ে আফগান ব্যবসায়ীদের ভারতে সম্পদ পাঠানোর ছাড়পত্র দিয়েছে ইসলামাবাদ। তবে ভারতীয় সম্পদকে পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। স্তানেকজাই বলেছে, “আমরা ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক যোগাযোগকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিই। আমরা তা অব্যাহত রাখতে চাই। তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছি আমরা।” এর পাশাপাশি তুর্কমেনিস্তান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান-ভারত (তাপি) গ্যাসলাইনের বিষয়েও মুখ খুলেছে সে। তার বক্তব্য, আফগানিস্তানে নয়া সরকার গঠনের পরই ওই গ্যাসলাইনের দিকে নজর দেওয়া হবে। যে সমস্যাগুলির জন্য গ্যাসলাইনের কাজ আটকে আছে, সেগুলির সমাধানের উপরও গুরুত্ব আরোপ করবে তালিবান।
এদিকে, ইতিমধ্যে এখনও পর্যন্ত দখলে না আসা পঞ্জশির দখলের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে তালিবান। ইতিমধ্যে গোটা প্রদেশ ঘিরে ফেলেছে তালিবানরা। পাশাপাশি কেটে দেওয়া হয়েছে টেলিফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবস্থাও। আশঙ্কা খুব দ্রুতই ফের পঞ্জশির প্রদেশ দখলে নিতে আক্রমণ চালাতে পারে তালিবানরা। অন্যদিকে, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তীব্র আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের (Pakistan) নিরাপত্তা উপদেষ্টা। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে সন্ত্রাসদমন সম্ভব নয়। আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা সরলে বিশ্বে সন্ত্রাস আরও বেড়ে যাবে। বাড়বে শরণার্থী সমস্যাও। এমনকী হতে পারে ৯/১১-র মতো হামলাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.