সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আই কান্ট ব্রিদ’, ‘ব্ল্যাক লাইফ ম্যাটার্স’ এই দুই স্লোগানই এখন আমেরিকাবাসীর প্রতিবাদের ভাষা। শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ক্ষুব্ধ করেছে আমেরিকাবাসীকে । ফলে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ককে শিকেয় তুলে রাস্তায় নেমে লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন প্রতিবাদীরা। এই অশান্তির আঁচ ছড়িয়েছে ৩০টিরও বেশি শহরে। তবে বিক্ষোভকে আমল দিতে রাজি নন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। ন্যাশনাল গার্ডে রক্ষা না হলে এদিন রাজপথে সেনা নামিয়ে সেই বিক্ষোভকে ‘ঠান্ডা’ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যু অকুতোভয় করে তুলেছে আমেরিকাবাসীকে। হোয়াইট হাউসের বাইরের চত্বরের অশান্তি আঁচ উত্তপ্ত করল অন্দর মহলকেও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের কিছু আগেই বিক্ষোভকারীদের দমাতে টিয়ার গ্যাস ছুঁড়তে হয় পুলিশকে। পুলিশ ও মিলিটারির সঙ্গে রীতিমতো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উত্তেজিত জনতা। কারফিউ জারি করেও বিক্ষোভের আগুন নেভাতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। তবে এই বিক্ষোভ দেখে ভয় পেতে রাজি নন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে ফের তোপ দাগলেন ট্রাম্প। ন্যাশনাল গার্ডে কাজ না হলে সেনা নামিয়ে বিক্ষোভকারীদের ‘ঠান্ডা’ করে দেব, হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দেব ইত্যাদি মন্তব্য করে তিনি প্রতিবাদীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করলেন।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই হুঁশিয়ারি টলাতে পারেনি প্রতিবাদীদের। জর্জের মৃত্যুতে রবিবার রাত থেকেই চলছে বিক্ষোভ। এরই মাঝে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণিত করে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, ক্রমাগত হাঁটুর চাপে ঘাড়ে ও পিঠে সংকোচনের কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছে আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড। মিনিয়াপলিসের (Minneapolis) এক পুলিশ অফিসার নিরস্ত্র ফ্লয়েডকে মাটিতে ফেলে, হাঁটু দিয়ে ঘাড় চেপে ধরেন। আট মিনিটের উপর এই ভাবে হাঁটুর চাপেই শ্বাসরোধ হয়ে প্রাণ হারান ফ্লয়েড। জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প এই রিপোর্ট সামনে এনেছেন। যদিও সরকারি ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে এই রিপোর্টের কোনও মিল নেই।
ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবী জানান, ঘাড়ের উপর ক্রমাগত হাঁটুর চাপ পড়ায়, মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। তার উপর পুলিশ অফিসারের ভারী ওজনের কারণে জর্জের পক্ষে শ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। সরকারি ময়নাতদন্তের রিপোর্টের উপর বিশ্বাস না রেখেই ফ্লয়েডের পরিবার আলাদা করে ময়নাতদন্ত করে। সেই রিপোর্টেই এই তথ্য প্রকাশ পায়। এই রিপোর্টের তথ্য জানতে পেরে আরও উত্তেজনা ছড়ায় হোয়াইট হাউস লাগোয়া লাফিয়েট পার্কেও। হাউসের সামনে হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীর ভিড় দেখে ট্রাম্পকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বেসমেন্টে। ততক্ষণে বিক্ষোভ ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করে পুলিশ ও সিক্রেট সার্ভিস। তবে প্রতিবাদীদের থামাতে ট্রাম্প প্রশাসন খড়গহস্ত হয়ে উঠলে বিক্ষোভের আঁচ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা রাজনীতিবিদদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.