সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ন্যাটো জোটের সদস্য দেশ তথা আমেরিকার বন্ধু তুরস্ককে ছিন্নভিন্ন করার হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি সিরিয়া নিয়ে একটি টুইট করেন ট্রাম্প। সেখানেই হুমকি দিয়ে বলেন, “সিরিয়া থেকে পাকাপাকিভাবে দুই হাজার সেনা প্রত্যাহার করছে আমেরিকা। এই সুযোগে ভুলেও যেন তুরস্ক স্বাধীনতাকামী কুর্দদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেয়। কারণ কুর্দিশ সেনারা কৌশলগত কারণেই আমেরিকার বন্ধু। তাদের দাবির প্রতি আমেরিকার নৈতিক ও সামরিক সমর্থন রয়েছে। এই অবস্থায় কুর্দদের উপর অভিযান চালানো মানে আমেরিকার স্বার্থে আঘাত করা। এটা চলবে না।
[নিশানায় মার্কিন রণতরী, ঘাতক ‘ডিএফ-২৬’ মোতায়েন করল চিন]
আঙ্কারাকে হুঁশিয়ার করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, কুর্দদের উপর তুরস্কের সেনাবাহিনী আঘাত হানলে তুরস্ককে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেওয়া হবে এবং তুরস্কের অর্থনীতিকে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হবে। তুরস্ক বরং এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করলে যেন আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করেই করে। এখনই কুর্দদের জন্য ২০ বর্গকিলোমিটারের একটা নিরাপদ এলাকা তৈরি করুক তুরস্ক। সিরিয়া সীমান্ত থেকে নিজেদের হাউৎজার কামানগুলি সরিয়ে নিক তারা। ট্রাম্পের তিনটি টুইটের জবাবে পালটা তোপ দেগেছে তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট জোসেফ তায়িপ এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, “মিস্টার ট্রাম্প উত্তেজিত হয়ে ভারসাম্যহীন কথা বলছেন। তুরস্ক মনে করে, ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে কুর্দিশ পেশমেরগাদের (কুর্দিশ সেনা) কোনও ফারাক নেই। ওরাও জঙ্গি। তুরস্ক ভেঙে স্বাধীন কুর্দিস্তান দেশ তৈরির জন্য ওরা লড়ছে। এরা তুরস্কের সার্বভৌমত্বের পক্ষে বিরাট বিপদ। তাহলে বলুন তো মিস্টার ট্রাম্প একটা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী কি করে আপনাদের বন্ধু বা জোটসঙ্গী হয়? আমরা ওদের বিরুদ্ধে লড়ব। আমেরিকারই উচিত বন্ধু দেশ তুরস্কের স্বার্থের ক্ষতি হয় এমন কোনও কিছু না করা এবং না বলা। কিন্তু ট্রাম্প এটা মানছেনই না।”
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবদে পদত্যাগ করেছেন ‘ম্যাড ডগ’ ম্যাটিস। সিরিয়ায় মার্কিন হস্তক্ষেপে ইতি পড়তেই আগ্রাসী হয়েছে তুরস্ক। কয়েকদিন আগেই জানা যায়, উত্তর সিরিয়ার কুর্দ মিলিশিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জমায়েত শুরু করেছে তুরস্কের মদতপুষ্ট বিদ্রোহীরা। তুরস্কের সরকারি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, উত্তর সিরিয়ায় কুর্দ মিলিশিয়া ‘কুর্দিশ পিপলস প্রোটেকশন ফোর্সেস’-এর (YPG) নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকার পাশে যোদ্ধাদের মোতায়েন করছে তুরস্কপন্থী হামজা ডিভিশন। উল্লেখ্য, ইসলামিক স্টেট ও আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে YPG-র নেতৃত্বে আমেরিকার পাশে দাঁড়িয়েছে ‘সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস’ (SDF)। এদিকে YPG-কে জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করেছে তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অভিযোগ, তুরস্কে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিচ্ছে SDF। ‘কুর্দিস্তান’ গঠনে কুর্দ জঙ্গিদের হাতিয়ার দিচ্ছে তারা। ফলে ‘আঙ্কল স্যাম’ পাততাড়ি গোটালেই সিরিয়ায় কুর্দিশ বাহিনীর উপর হামলা চালাবে তুরস্কের সেনা।
[উদ্বেগে ভারত, চিনের দয়ায় পাকিস্তানের হাতে ব্রহ্মস-এর প্রতিপক্ষ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.