সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যখন করোনার (Covid) থাবায় নাস্তানাবুদ গোটা বিশ্ব। যখন আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে মাইক্রোস্কপিক এক ভাইরাস, তখনই অসাধ্য সাধন করলেন আমেরিকার (USA) একদল চিকিৎসক। মানুষের শরীরে জিন পরিবর্তিত শূকরের হৃৎপিণ্ড (Pig Heart) বসালেন তাঁরা।
সত্যি বলতে ৫৭ বছর বয়সি ডেভিড বেনেটের কাছে আর কোনও পথও ছিল না। জীবন ও মৃত্যুর নো-ম্যানস ল্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এই অবস্থায় সাহসী সিদ্ধান্ত নিতেই হত। তাই নেন তিনি। নিজের শরীরে জিন পরিবর্তিত শূকরের হৃৎপিণ্ড বসানোর অনুমতি দেন তিনি চিকিৎসকদের। সেই কাজ সফল ভাবে করলেন আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের (University of Maryland Medical School) চিকিৎসকরা।
জানা গিয়েছে, ঐতিহাসিক অস্ত্রোপচারে সময় লেগেছে ৭ ঘণ্টা। দিন তিনেক আগেই হয়েছিল অস্ত্রোপচার। ডেভিড এখনও পর্যন্ত ভাল আছেন বলেই জানা গিয়েছে। মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা ডেভিড অস্ত্রোপচারের আগে বলেছিলেন, “হয় মরতে হত অথবা এই অস্ত্রোপচারটা করতে হত। আমি বাঁচতে চাই। আমি জানি এই কাজে ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু এটাই আমার শেষ আশা।”
শুরুতে চিকিৎসকরা ডেভিডের এই অস্ত্রোপচার নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ছিলেন। পরে তাঁর অবস্থা দেখে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হন। আসলে গত কয়েক মাস ধরেই হৃদযন্ত্রের অসুস্থায় শয্যাশায়ী ডেভিড। হৃদযন্ত্র-ফুসফুসের বাইপেপ মেশিনের সাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে কোনও ভাবে বেঁচে আছেন। এই পরিস্থিতি থেকেই মুক্তি চেয়েছিলেন তিনি।
বিরল অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত এক চিকিৎসক বলেছেন, ‘‘আমেরিকায় এক দিনে সতেরো জন মানুষের মৃত্যু হয় অঙ্গপ্রতিস্থাপন করতে না পারার ফলে। অপেক্ষার তালিকায় রয়েছেন লক্ষধিক মানুষ। এই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপনযোগ্য অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে আরও এক ধাপ এগোনো গেল।’’
প্রসঙ্গত, এর আগে মানবদেহে শূকরের কিডনি (Pig Kidney) প্রতিস্থাপনের ঘটনা সামনে এসেছিল। সেই কাজও করেছিলেন মার্কিন চিকিৎসকরা। ওই অস্ত্রোপচারকেও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বড় মাইলফলক বলেই মনে করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.