সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যবসা তাঁর রক্তে৷ রিয়েল এস্টেটের সফল ব্যবসায়ী হিসেবে বিশ্বজোড়া নাম৷ শেষে পাকেচক্রে রাজনীতিতে নেমে একেবারে বিশ্বের সর্বোচ্চ শাসকের চেয়ারে বসা৷ এটাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংক্ষিপ্ত জীবনী৷ আর প্রেসিডেন্ট হয়েও তিনি তাঁর মূল পেশা থেকে সরে আসতে পারেননি৷ ফের সওদা নিয়ে মেতেছেন৷
আন্তর্জাতিক সংবাদ পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলছে, গ্রিনল্যান্ডের অংশবিশেষ কিনতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পূর্ব কানাডার মধ্যে বরফঢাকা গ্রিনল্যান্ডের যেটুকু অংশ রয়েছে, তাকে আমেরিকার অন্তর্ভুক্ত করতে চান ট্রাম্প৷ এবিষয়ে তিনি আইনি পরামর্শও নিচ্ছেন৷ তবে হোয়াইট হাউসের তরফে এনিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি৷
ডেনমার্কের অন্তর্গত ৭ লক্ষ ৭২ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার গ্রিনল্যান্ড একটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল৷ ৫৭ হাজার মানুষের বসবাস এখানে, তাদের বেশিরভাগই আদিম ইনুইট সম্প্রদায়ের৷এই পরিস্থিতিতে এই অঞ্চল কিনতে চাওয়ার অর্থ বিবিধ৷ ট্রাম্প সমর্থকদের মতে, আমেরিকার অন্তর্ভূক্ত হলে তা গ্রিনল্যান্ডবাসীর জন্য ভাল হবে৷ আবার কেউ বলছেন, এটা নিছকই ট্রাম্পের আগ্রাসী মনোভাবের প্রতিফলন৷কারও আবার আশঙ্কা, গ্রিনল্যান্ডের কিছুটা অংশ কিনে সেখানে সেনা সক্রিয়তা বাড়াতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন৷ কারণ এমনিতেই গ্রিনল্যান্ডের থুলে বিমানবন্দরটি মার্কিন বিমানবাহিনী ব্যবহার করে৷
এদিকে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর যদিও ডেনমার্ক প্রশাসনের অন্দরে বেশ তীব্র প্রতিক্রিয়ার বহিপ্রকাশ ঘটেছে৷ সেখানকার আইনসভার সদস্যরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ৷ সকলেই ট্রাম্পকে ‘পাগল’ বলে উল্লেখ করছেন৷ দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সোরেন এসপার্সেনের কথায়, ‘এটা যদি সত্যিই উনি ভেবে থাকেন, আর যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে বলতেই হয় যে উনি পাগল হয়ে গিয়েছেন৷ কী মনে করছেন উনি? গ্রিনল্যান্ডের ৫০হাজারেরও বেশি মানুষকে কিনে নেবেন!’ আরেক সাংসদ বলছেন, ‘আমার মনে হয়, গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দারা আমেরিকার চেয়ে ডেনমার্কের সঙ্গে থাকতেই বেশি পছন্দ হয়৷’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লার্স লিউক রাসমুসেন বলছেন, ‘এটা এপ্রিল ফুল জোকের মতো কথা৷ কিন্তু এখন তো এপ্রিল নয়৷ তাই গুরুত্ব দিচ্ছি না৷’
আগামী সেপ্টেম্বরে কোপেনহেগেন সফরে যাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ সেখানে আর্কটিক অঞ্চলের দেশগুলির সম্মেলন আছে৷ আলোচনা হবে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়েও৷ এমনিতেই উষ্ণায়নের প্রভাবে গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলছে, সমুদ্রতলের উষ্ণতা বাড়ছে৷ মেরুপ্রদেশে জুলাইতে তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে সর্বোচ্চ৷ এসব নিয়ে আলোচনার মাঝেই ট্রাম্প এই নিয়ে প্রস্তাব পেশ করতে পারেন বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.