সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউরোপের পর করোনার ভরকেন্দ্র এখন আমেরিকা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। মার্কিন মুলুকে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ছাড়িয়েছে। তাই করোনার মতো মারণ ভাইরাস থেকে বাঁচতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া আর কোনও সমাধান নেই বলে জানালেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন আরও একমাস দেশজুড়ে জারি থাকবে লকডাউন। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই ট্রেম্প জানিয়েছিলেন আমেরিকার পরিস্থিতি এখন অনেকটাই ভাল। আর কিছুদিনের মধ্যেই দেশে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু করোনার প্রকোপ কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিল তাঁকে।
করোনার প্রভাবে আমেরিকার পরিস্থিতি এখন বেশ ভয়াবহ। আক্রান্তের পরিসংখ্যানে ইটালি ও স্পেনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে মার্কিন মুলুক। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ৪২ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৪৮৪ জনের। করোনা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে নিউ ইয়র্কে। এই পরিস্থিততে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে ১৫ দিনের জন্য যে ‘সোশ্যাল ডিসটেন্স’ চালু করা হয়েছিল, তার মেয়াদ সোমবার শেষ হচ্ছে। ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তারপর দেশের কিছু অংশে নিয়মকানুন শিথিল করা হবে। কিন্তু পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে সেই মন্তব্য ফলপ্রসূ তো তিনি করতে পারলেনই না। উলটে লকডাউন ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে চিকিৎসক অ্যান্টনি ফৌসির বিবৃতি। রবিবারই তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই মহামারিতে আমেরিকায় ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে ও লক্ষ লক্ষ সংক্রমিত হতে পারেন। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি এড়াতে তিনি বলেছিলেন, জমায়েত এড়াতে হবে ও বয়স্কদের ঘরবন্দি থাকার কথা বলেছিলেন। আশা করা হয়েছিল তার ফলে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে স্বমহিমায় ফিরতে পারবে আমেরিকা। কিন্তু তা হয়নি। তাই লকডাউনের সিদ্ধান্ত সম্প্রসারণ করেন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকার প্রাণশক্তি ফিরে পেতে চান তিনি। যদিও দেশে আক্রান্ত বা মৃত্যুর খবর নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি ট্রাম্প। কিন্তু জানা গিয়েছে, গত দু’দিনে মার্কিন মুলুকে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। শুধুমাত্র নিউ ইয়র্কেই আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৫২ হাজার মানুষ। তবে ১ জুনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে এই উদ্বিগ্ন পরিস্থিতির মধ্যে কানাডা থেকে আমেরিকায় এসেছেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মর্কেল। কিন্তু ট্রাম্প তা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন একেবারেই। তিনি জানিয়েছেন, হ্যারি-মেগান যেন নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেরাই করে নেন। এর জন্য নিজেদের গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে তাঁদের। প্রশাসন তাঁদের কোনও রকম সাহায্য করতে পারবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.