সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকা-চিন যুদ্ধ কি আসন্ন? বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ কি শেষ পর্যন্ত জড়িয়ে পড়বে অবশ্যসম্ভাবী সংঘর্ষে? মার্কিন (US) হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির (Nancy Pelosi) তাইওয়ান (Taiwan) সফরই কি বয়ে আনবে সেই সমর-বার্তা? তাইওয়ান নিয়ে যেভাবে ওয়াশিংটনকে পর পর প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছে বেজিং, যেভাবে এই নিয়ে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে উত্তেজনার পারদ, তাতে যে কোনও সময় সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার তাইওয়ানে পৌঁছেছেন ন্যান্সি। আমেরিকার বিশেষ বিমানে আসেন তিনি। তাঁর বিমানকে এসকর্ট করে নিয়ে আসে তাইওয়ানের বায়ুসেনার একাধিক ফাইটার জেট। কিন্তু এরপরেও অবস্থাটা মোটেই সুবিধাজনক নয়। ন্যান্সি যখন নামেন তাইওয়ানের শোংসান বিমানবন্দরের চারপাশ তখন অন্ধকারে ঢাকা। নিরাপত্তারক্ষী ও আধিকারিকরা নিরাপত্তাজনিত বিমানবন্দরের আলো নিভিয়ে টর্চ জ্বেলে স্বাগত জানান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্রকে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ২১টি চিনা ফাইটার জেট ঢুকে পড়ে তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স এলাকায়। ফলে উত্তেজনার পারদ যে ঊর্ধ্বমুখী তাতে সন্দেহ নেই।
২৫ বছরেরও বেশি সময় পর ন্যান্সিই প্রথম শীর্ষ স্তরের কোনও মার্কিন আধিকারিক, যিনি তাইওয়ানে পা রাখলেন। ন্যান্সির তাইওয়ানে পা রাখার আগেই মঙ্গলবার ফের আমেরিকাকে হুমকি দিয়েছিল চিন (China)। সেদেশের বিদেশমন্ত্রীর মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, “মার্কিন স্পিকার তাইওয়ানের মাটিতে পা দিলে আমেরিকাকে তার মূল্য চোকাতে হবে। চিনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তায় হাত পড়লে তার দায় নিতে হবে আমেরিকাকেই।”
এই সফর নিয়ে মঙ্গলবার আমেরিকাকে কূটনৈতিক প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে ড্রাগনের দেশ। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে পাঠানো সেই প্রতিবাদপত্রে লেখা রয়েছে, ‘চিনের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক প্রতিবাদপত্র ওয়াশিংটনকে পাঠিয়েছি। স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ভ্রমণসূচির উপর আমরা লক্ষ্য রাখছি। যদি আমেরিকা ভুল পথে পা বাড়ায় তাহলে নিজেদের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা রক্ষার ভার আমাদেরই কড়া হাতে পালন করতে হবে।’
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ইতিমধ্য়েই চিনের সঙ্গে যুদ্ধে নেমে পড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তাইওয়ান। সে দেশের সেনাবাহিনীর জন্য ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি হয়েছে। সমস্ত সেনা অফিসারের ছুটি বাতিল হয়েছে। সেনাকর্তাদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠকের পরই অবিলম্বে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে এয়ার ডিফেন্স বাহিনী। হাত গুটিয়ে বসে নেই আমেরিকাও। তাইওয়ানের পূর্বে চারটি মার্কিন রণতরী নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আকাশযান-বাহী, ইউএসএস রোনাল্ড রেগান। ফলে ফের বাতাসে বারুদের গন্ধের আভাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.