সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন সংঘাতের আবহে ফের যুদ্ধে জড়াল আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলের দখল নিয়ে আবারও লড়াই শুরু করেছে দুই দেশের সেনাবাহিনী বলে খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ (Nagorno-Karabakh) অঞ্চলে কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি উঁচু জায়গা দখল করেছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। পালটা হামলা চালিয়েছে আর্মেনিয়ার ফৌজও। এই সংঘর্ষে দু’পক্ষেই বেশ কয়েকজন সেনা হতাহত হয়েছে বলে খবর। তবুও জায়গা ছাড়তে রাজি নয় বাকু বা ইয়েরেভান কেউই। এই সংঘাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। এক বিবৃতিতে মার্কিন বিদেশ দপ্তর দুই পক্ষের কাছেই লড়াই থামিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খোঁজার আবেদন জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, আর্মেনিয়াকে বরাবর মদত জুগিয়ে এসেছে রাশিয়া (Russia)। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে আপাতত অন্যদিকে নজর দেওয়ার ফুরসত নেই পুতিন বাহিনীর। সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে আজারবাইজান।
উল্লেখ্য, আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া দুই দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের সদস্য ছিল। নব্বইয়ের দশকে সোভিয়েতের পতনের পরই সীমান্ত সংঘাত শুরু হয় তাদের মধ্যে। ওই সময় আর্মেনিয়ার মদতে আজারবাইজান থেকে আলাদা হয়ে যায় নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল। ২০২০ সালে এই বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে যুদ্ধে জড়ায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। মৃত্যু হয় কয়েক হাজার সেনার। দু’পক্ষের কাছে জয় অধরা থাকলেও নাগর্নো-কারাবাখের বেশকিছু জায়গা ফের দখল করতে সক্ষম হয় আজারবাইজানের সেনা। তবে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশই। চুক্তি মোতাবেক বর্তমানে বিতর্কিত অঞ্চলটিতে মোতায়েন রয়েছে রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনী।
প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, ৪ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারের বিতর্কত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভৌগলিক সীমানার মধ্যেও হলেও আর্মেনীয় বিদ্রোহীদের দখলে। এই অঞ্চলের দখল নিয়ে আর্মেনিয়া-আজাবাইজান মতবিরোধের সূচনা ১৯৮৮ সালে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সদ্যস্বাধীন দুই দেশের মতবিরোধ গড়ায় সামরিক সংঘাতে। এই অঞ্চলের প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দার অধিকাংশই আর্মেনীয় খ্রিস্টান। ১৯৯৪ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে নাগর্নো-কারাবাখ এবং আশপাশের বেশ কিছু অঞ্চল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণে। ২০১৬ সালেও ওই এলাকার দখল নিতে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল আজারবাইজান ফৌজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.