সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টুইট-পালটা টুইটে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল। মোটামুটি সকলেই আঁচ করতে পেরেছিলেন, আসাদের রাসায়নিক হামলার বিরুদ্ধে আমেরিকা অন্তত চুপ করে বসে থাকবে না। শুক্রবার রাতে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সিরিয়ায় আসাদের ঘাঁটিতে আক্রমণের নির্দেশ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের নির্দেশ পেতেই ঝাঁকে ঝাঁকে মার্কিন যুদ্ধবিমান উড়ে গেল সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের মূল সেনাঘাঁটির দিকে। হামলার উদ্দেশ্য, আসাদের রাসায়নিক অস্ত্রাগারগুলি ধ্বংস করে দেওয়া। পালটা আমেরিকাকে জবাব দিচ্ছে রুশ সাহায্যপ্রাপ্ত সিরিয়ার এলিট মিলিটারি ফোর্স রিপাবলিকান গার্ডের ফোর্থ ডিভিশন।
Anti-aircraft fire is seen over Damascus, as U.S., British and French forces pounded Syria with air strikes in response to a poison gas attack: https://t.co/H2iRu8evih 📷 Feras Makdesi pic.twitter.com/b8aJyegvAW
— Reuters Pictures (@reuterspictures) April 14, 2018
শুক্রবার মধ্যরাতেই সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আসাদের বিরুদ্ধে এই অভিযানে তাঁর সঙ্গে রয়েছে ফ্রান্স ও ব্রিটেন। ওই দুই মিত্রশক্তির বায়ুসেনাও শুক্রবার রাতেই উড়ে গিয়েছে সিরিয়ার দিকে। সিরিয়াতে ততক্ষণ ধরে বোমাবর্ষণ হবে যতক্ষণ না আসাদের সবক’টি রাসায়নিক অস্ত্রাগার নষ্ট হয়। গত সপ্তাহে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের নির্দেশে স্থানীয় একটি ত্রাণশিবিরে রাসায়নিক হামলায় অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়। মুখে গ্যাঁজলা ওঠা শয়ে শয়ে মৃতদেহে দেখে শিউরে ওঠেন চিকিৎসকরাও। চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন, ক্লোরিন বা অন্য কোনও বিষাক্ত নার্ভ গ্যাস ছাড়া এভাবে কারও দেহে বিষ ঢুকতে পারে না। মার্কিন সেনা দাবি করে, সেনা হেলিকপ্টার থেকে ব্যারেল বোমায় টক্সিক নার্ভ এজেন্ট ‘সারিন’ পুরে আকাশ থেকে মাটিতে ফেলা হয়।
VIDEO footage of Syrian air-defense missile fired towards tomahawk rockets in the sky of Damascus. pic.twitter.com/5Mzx1D2Qwz
— Yusha Yuseef (@MIG29_) April 14, 2018
Via @AP: Syrian media reported that air defenses hit 13 rockets south of Damascus. After the attack ceased and the early morning skies went dark once more, vehicles with loudspeakers roamed the streets of Damascus blaring nationalist songs. 3/3
— Marc Levy (@timelywriter) April 14, 2018
White House Press Secretary Sarah Huckabee Sanders and new National Security Advisor John Bolton watch as President Donald Trump announces military strikes on Syria. More in our story: https://t.co/O5FaXldoE4 📷 Yuri Gripas pic.twitter.com/oLD1Tdp8K5
— Reuters Pictures (@reuterspictures) April 14, 2018
শুক্রবার রাতে সিরিয়ার বিরুদ্ধে হামলার নির্দেশ দেওয়ার আগে হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘খানিকক্ষণ আগেই আমি মার্কিন সেনার সশস্ত্র বাহিনীকে সিরিয়ার একনায়ক বাশার আল-আসাদের রাসায়নিক অস্ত্রাগারগুলি গুঁড়িয়ে দিতে হামলার নির্দেশ দিয়েছি।’ মার্কিন সেনার এক পদস্থ আধিকারিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, একসঙ্গে কয়েকশো টার্গেটের দিকে একের পর এক টোমাহক মিসাইল ছুটে যাচ্ছে। আসাদ ও তাঁর সেনার রাসায়নিক অস্ত্রাগারগুলি অপাতত প্রাথমিক টার্গেট। ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আসাদ মানুষ নয়। অপরাধ করে এমন দৈত্য।’ এদিকে, সিরিয়ার আকাশ ঢেকে গিয়েছে কালো ধোঁয়ায়। বোমার শব্দে কান পাতা দায়। ট্রাম্প জানিয়েছেন, অসাদের যাবতীয় রাসায়নিক অস্ত্রের নির্মাণ, ব্যবহার ও বিক্রি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রুখে দেবে আমেরিকা।
American, British and French airstrikes rock Damascus with explosions to east, south and west of Syrian capital: https://t.co/uHPpIGCI0c pic.twitter.com/iq9Y88cTxa
— The Associated Press (@AP) April 14, 2018
যদিও ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কিন্তু এই বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিল বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, একা সিরিয়া নয়, ট্রাম্পের মুখে রাশিয়া ও ইরানের প্রবল সমালোচনাও এদিন শোনা গিয়েছে। আসাদের সরকারকে ওই দুই দেশের সরকার প্রত্যক্ষভাবে মদত দেয়, সে কথা কারও অজানা নয়। রাশিয়া গত সপ্তাহেই জানিয়েছিল, সিরিয়ার দিকে একটিও মিসাইল ধেয়ে এলে, মস্কো বাধ্য হবে সেগুলি মাঝআকাশেই নষ্ট করে ফেলতে। এদিন, মার্কিন সেনার অভিযানের পর রাশিয়াও চুপ করে বসে থাকার পাত্র নয় বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্প প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ইরান ও রাশিয়াকে আমার প্রশ্ন, নিরীহ মানুষকে গণহত্যার নির্দেশ দেয় যে সরকার, তার পাশে কী করে কেউ দাঁড়াতে পারে?’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে জানিয়েছেন, তিনি ব্রিটিশ সেনাকে নির্দেশ দিয়েছেন, মার্কিন সেনার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সিরিয়া থেকে সমস্ত রাসায়নিক অস্ত্র নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে। তবে এই অভিযান কোনওভাবেই সিরিয়ার সরকারকে ফেলতে ব্রিটেনের হস্তক্ষেপ নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মুখেও একই কথা শোনা গিয়েছে। অন্যদিকে, মার্কিন ও মিত্রশক্তির হামলার হাজার হাজার নিরীহ মানুষ মারা যেতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সিরিয়ায় কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি।
BREAKING: President Trump orders US forces to launch precision strikes on targets associated with chemical weapons in Syria https://t.co/g3KpgYzbUN pic.twitter.com/GJ9WF29abZ
— CNN (@CNN) April 14, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.