সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারে (Myanmar) সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে কড়া বার্তা দিল রাষ্ট্রসংঘ। বার্মিজ সেনার (টাটমাদাও) কাছে দ্রুত সে দেশের স্টেট কউন্সিলর আং সান সু কি-সহ অন্য নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ (UNSC)।
মায়ানমারে সেনার হাতে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হওয়ায় গোটা বিশ্বজুড়েই বয়ে গিয়েছে নিন্দার ঝড়। অভুত্থান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেন তাঁর বিবৃতিতে দেশটির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করার হুমকি দিয়েছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও সু কি’কে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভারত, ব্রিটেন-সহ একাধিক দেশ। আবার চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র সেনা অভ্যুত্থান সত্বেও বুঝিয়ে দিয়েছেন মায়ানমারে যাই ঘটুক না কেন, বরাবরের মতোই দেশটির পাশে থাকবে বেজিং। এহেন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি জারি করে নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, “ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখে মায়ানমারে হওয়া সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কোনও সঙ্গত যুক্তি ছাড়াই সু কি-সহ সরকারের অন্য সদস্যদের আটক করা হয়েছে। তাঁদের দ্রুত মুক্তি দেওয়া হোক।”
এদিকে, সু কি’র গ্রেপ্তারিতে বিক্ষোভ বাড়ছে দেখে দেশজুড়ে ফেসবুক পরিষেবা বন্ধ করে দিল মায়ানমারের নয়া সেনা সরকার। যদিও তাতে ক্ষোভ বাড়ছে আরও। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছেন বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। এর মধ্যে শাসক দলের কর্মী-সমর্থক ছাড়াও রয়েছেন মানবাধিকারকর্মী, চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার মায়ানমারের শাসকদল ‘ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র মুখপাত্র মায়ও নায়ান্ট জানান আচমকা কউন্সিলর সু কি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও অন্য নেতাদের আটক করে সেনাবাহিনী। গত বছর বিরোধীদের পরাজিত করে ক্ষমতায় ফিরছে আং সান সু কি’র (Aung San Suu Kyi) দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (NLD)। মায়ানমার সংসদের নিন্মকক্ষের ৪২৫টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয়ী হয় তারা। কিন্তু, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বিগত দিনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সু কি সরকারের। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও করেছে সামরিক ‘জুন্টা’। বলে রাখা ভাল, ২০০৮ সালে সামরিক নজরদারিতে যে সংবিধান তৈরি হয়েছে, সেখানে পার্লামেন্টে কোনও বড় আইন রুখে দেওয়ার মতো আসন সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলিও সেনার হাতে রয়েছে। ফলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেও, গণতান্ত্রিক শাসন এখনও প্রতিষ্ঠা হয়নি সে দেশে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.