সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই মায়ানমারের (Myanmar) শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় সেনা। জুন্টার হাতে বন্দি হন দেশের প্রধান শাসক আং সাং সুকি (Aung San Suu Kyi) ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ত। তারপর থেকে গণতন্ত্রকামীদের আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়েছে মায়ানমার। ইতিমধ্যেই সেনার গুলিতে পাঁচশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু দেশে এই মৃত্যুমিছিল সম্পর্কে সম্ভবত কিছুই জানেন না বন্দি থাকা সুকি! তেমনই দাবি তাঁর আইনজীবীর।
বৃহস্পতিবার আদালতে এক শুনানির জন্য উপস্থিত করা হয়েছিল সুকি ও উইন মিন্তকে। দেখা গিয়েছে, তাঁদের স্বাস্থ্যের কোনও অবনতি হয়নি। তাঁদের আইনজীবী মিন মিন সু জানিয়েছেন, তিনি চেষ্টা করেও সুকিকে এই বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি। কেননা তাঁকে তাঁর মক্কেলদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ওই আইনজীবী জানিয়েছেন, শুনানি ১২ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়েছে।
এদিকে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ করে গত শনিবারের পর থেকেই। ওই দিন শতাধিক আন্দোলনকারীকে হত্যা করেছিল জুন্টা। তারপর থেকেই মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে।
মায়ানমারের সংসদের নির্বাসিত সদস্যদের নিয়ে তৈরি সেনা-বিরোধী গোষ্ঠীও এই গেরিলা বাহিনীগুলির সাহায্য নিতে প্রস্তুত। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেরিলা জনজাতিদের গ্রামে আকাশপথে হামলা চালাচ্ছে জুন্টা। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে অচিরেই পুরোপুরি গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আজই রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে এব্যাপারে।
এদিকে দেশজুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে চাপ বেড়েছে থাইল্যান্ড সীমান্তে। মায়ানমার থেকে বড় অংশের সাধারণ জনতা থাইল্যান্ডে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে থাইল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, তারা ২,৭৮৮ জনকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। এখনও মায়ানমারের প্রায় ২০০ জন রয়ে গিয়েছেন থাইল্যান্ডে। তাঁদের অধিকাংশই মহিলা, শিশু ও বয়স্ক মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.