সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল মায়ানমার (Myanmar)। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। পালটা, বিক্ষোভ দমনে আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে সেনাবাহিনী। সঙ্গে রয়েছে করোনা মহামারীর প্রকোপ। সব মিলিয়ে চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে মায়ানমার। এহেন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘ আশঙ্কা করছে যে আগামী বছরের গোড়ায় দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা, অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি মানুষ অনাহারে ভুগবেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে আচমকাই মায়ানমারের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় সেনাবাহিনী। বন্দি করা হয় কাউন্সিলর আং সান সু কি-সহ গণতান্ত্রিক সরকারের শীর্ষ প্রতিনিধিদের। তারপর থেকেই সে দেশে শুরু হয়েছে প্রবল বিক্ষোভ। এহেন রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতিতে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে ‘ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (UNDP)। সেখানে বলা হয়েছে, আগামী বছরের গোড়ায় মায়ানমারের অর্ধেক জনসংখ্যা, অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি মানুষ অনাহারে ভুগবেন। ২০০৫ সালের পর থেকে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল দেশটির অর্থনীতি। কিন্তু গত বছর করোনা মহামারীর ধাক্কায় তা কিছুটা থমকে যায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়েছে। ব্যাংকিং থেকে স্বাস্থ্য বা শিক্ষা পরিষেবা, সব কিছুই প্রায় স্তব্ধ। এভাবে আরও কয়েক মাস চললে আগামী বছর এই দেশের অর্ধেক মানুষ খেতে পাবেন না।
উল্লেখ্য, এপর্যন্ত ফৌজের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০০জন গণতন্ত্রকামী। এদিকে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে। মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার মায়ানমারের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালানো হয়। সেনা সূত্রে খবর, মাগওয়ে শহরের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আছড়ে পড়ে চারটি রকেট। তারপর মধ্য মায়ানমারে মেইকটিলা বায়ুসেনা ঘাঁটিতেও আঘাত হানে পাঁচটি রকেট। যদিও ওই হামলায় কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এই হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি বলে জানিয়েছে টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনাবাহিনী। এই ঘটনার নেপথ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি’র (কেআইএ) হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.