সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাতে কালাশনিকভ রাইফেল। গায়ে বুলেট প্রুফ ভেস্ট। অনেকের কাঁধে আবার রকেট লঞ্চার। তালিবান (Taliban) জঙ্গিদের অস্ত্রের বাহার রীতিমতো ভীতি জাগানোর মতো। এবার তাদের হাতে এসেছে আফগান সেনার ফেলে যাওয়া মার্কিন ফৌজের অত্যাধুনিক এম-১৬ রাইফেল থেকে শুরু করে মিসাইল সিস্টেম। আজ তালিবানের ভাঁড়ারে মানুষকে হত্যা করার সরঞ্জামের অভাব নেই। তবে বারুদ পর্যাপ্ত থাকলেও নেই ভাত। তালিবানি শাসনে অনাহরের মুখে পড়তে চলেছেন অন্তত ১ কোটি ৪০ লক্ষ আফগান।
বুধবার বিশ্ব খাদ্য প্রকল্পের প্রধান মেরি এলেন ম্যাকগ্রোয়ার্টি কাবুল থেকে রাষ্ট্রসংঘকে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। দেশজুড়ে চলা নৈরাজ্য ও অরাজকতার মাঝে সাধারণ আফগানদের কাছে খাদ্য সংগ্রহ করা ক্রমে কঠিন হয়ে উঠছে। জঙ্গিদের ভয়ে ব্যবসার সাধারণ নিয়ম ও পরিকাঠামো সমস্ত কিছুই প্রায় ভেঙে পড়েছে। ফলে খাদ্য পরিবহণও ধাক্কা খেয়েছে। একইসঙ্গে মার খেয়েছে উৎপাদনও। তবে খাদ্য সঙ্কটের কারণ হিসাবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছেন ম্যাকগ্রোয়ার্টি। শেষ তিন বছরে দু’বার মারাত্মক খরার মুখে পড়েছে এই দেশটি, তার উপর করোনা পরিস্থিতি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে অনেকটাই পিছনের সারিতে ঠেলে দিয়েছে। এর পর আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান। এর ফলেই সামগ্রিক পরিস্থিতি দেশটিকে খাদ্য সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
দেশটির বর্তমান পরিস্থিতির ছবি রাস্ত্রসংঘের কাছে তুলে ধরে ম্যাকগ্রোয়ার্টি বলেছেন, ‘‘অনাবৃষ্টির কারণে দেশের একটা বড় অংশের ফসল নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া তালিবান একের পর এক প্রদেশে যুদ্ধ করেছে, তার ফলে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। ফসলের গোলা পুড়ে গিয়েছে, এমন উদাহরণও রয়েছে। সব মিলিয়ে মোট উৎপাদনের ৪০ শতাংশ ফসল ইতিমধ্যে নষ্ট। শীত ক্রমে এগিয়ে আসছে। তার আগে যথেষ্ট পরিমাণ ফসল উৎপাদিত না হলে তীব্র খাদ্য সঙ্কট তৈরি হতে পারে।’’
উল্লেখ্য, পঞ্জশিরে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স। স্থানীয় প্রতিরোধে বেশ কিছু এলাকা হারিয়েছে তালিবান জঙ্গিরা। আর তালিবান বিরোধী এই জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সদ্য-প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির (Ashraf Ghani) ‘ডেপুটি’ আমরুল্লা সালেহ। তিনি বুধবারই ঘোষণা করেছেন, যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। উত্তর-মধ্য আফগানিস্তানের এই এলাকা দিয়েই কাবুল থেকে মাজার-ই-শরিফের পথ গিয়েছে। ফলে ফের দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হতে চলেছে বলে আশঙ্কা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.