সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্যালেস্তিনীয় বিদ্রোহী সংগঠন হামাস দমনে ইজরায়েলি (Israel) সেনা গাজায় (Gaza) লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে। তেমনই এক হামলায় মৃত্যু হল অবসরপ্রাপ্ত এক ভারতীয় সেনার। চলন্ত গাড়িতে হামলার জেরে নিহত হয়েছেন কর্নেল বৈভব অনিল কালে (Colonel Waibhav Anil Kale)। পুণের বাসিন্দা বৈভব রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও। আন্তর্জাতিক সংস্থার তরফে ভারতের কাছে ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে যুদ্ধবিরতির ডাক দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের একাধিক সংগঠন।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ৪৬ বছর বয়সি কর্নেল বৈভব নাগপুরের বাসিন্দা। ১৯৯৮ সাল তিনি সেনায় যোগ দেন। ১১ নং জম্মু এবং কাশ্মীর রাইফেলসে অন্যতম সদস্য ছিলেন। এক সময় সিয়েচেনে কঠিন প্রাকৃতিক পরিবেশে সীমান্তরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। সেনা স্কুলে শিক্ষাকতাও করেছেন। অবসর নেওয়ার পরে রাষ্ট্রসংঘের ‘সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি’ বিভাগে যোগ দেন। তিন সপ্তাহ আগে রাফায় পৌঁছে কাজে বুঝে নেন তিনি। সোমবার এক সহকারীর সঙ্গে রাষ্ট্রসংঘের একটি গাড়িতে করে রাফার একটি ইউরোপীয় হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র রোনাল্ডো গোমেজের দাবি, আন্তর্জাতিক সংস্থার গাড়ি যাওয়ার কথা জানানো ছিল ইজরায়েল প্রশাসনকে। গাড়িটি যে রাষ্ট্রপুঞ্জের তাও চিহ্নিত করা ছিল, গাড়ির অবস্থানও বলা ছিল। এর পরেও ওই গাড়িটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোয় হতবাক এবং উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ।
সম্প্রতি একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই নিয়ে আটবার ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাওয়া দলের উপরে হামলা চালাল ইজরায়েল। রাষ্ট্রসংঘের ভারতীয় কর্মীর মৃত্যুর খবরে শোকপ্রকাশ করে মহাসচিব গুতেরেস বলেছেন, ‘রাফার ইউরোপিয়ান হাসপাতালে যাওয়ার পথে ইজরায়েলি হানায় রাষ্ট্রসংঘের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও এক কর্মী।” পাশাপাশি কর্নেল বৈভবের মৃত্যুর ঘটনায় ভারতের কাছে ক্ষমা চাইলেন রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকার এবং ভারতরে জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি, সমবেদনা জানাচ্ছি।’ উল্লেখ্য, কর্নেল বৈভব ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত রাষ্ট্রসংঘের প্রথম আন্তর্জাতিক সদস্য।
প্রসঙ্গত, ইজরায়েলি আগ্রাসন থামার কোনও লক্ষণই নেই। বরং বন্ধু আমেরিকার অস্ত্র ও অর্থের জোরে গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যে সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়াচ্ছে। যাদের সিংহভাগ শিশু। বিশ্বের একাধিক দেশ ইজরায়েল ও আমেরিকার নিন্দা করলেও তাতে পাত্তা দিতে রাজি নয় তেল আভিভ এবং ওয়াশিংটন। সম্প্রতি সম্প্রতি আমেরিকার রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম হিরোশিমা-নাগাসাকির ধাঁচে গাজায় পরমাণু হামলারও পরামর্শ দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.