সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এও এক পুনর্জন্ম। চোখের সামনে দুই ভাইকে মরতে দেখেছেন। তাঁরও কান ও গাল স্পর্শ করেছে উত্তপ্ত বুলেট। সেই সঙ্গে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শুয়ে পড়তে হয়েছে কবরে। কিন্তু ‘জ্যান্ত’ কবরে গিয়েও ফিরে এলেন ইউক্রেনীয় (Ukraine) যুবক মাইকোলা। তাঁর ফিরে আসার কাহিনি তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া (Russia-Ukraine War)। তারপর থেকেই লাগাতার চলছে সংঘর্ষ। কিন্তু উত্তর ইউক্রেনের চেরনিহিভ অঞ্চলের বাসিন্দা মাইকোলা ও তাঁর পরিবার সেভাবে যুদ্ধের আঁচের মুখে পড়েননি। কিন্তু সব হিসেবে বদলে যায় ১৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সঙ্গে কথা বলার সময় এমনই জানিয়েছেন ওই যুবক। ওই সময় ওই অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনার হামলায় বেকায়দায় পড়তে হয়েছিল রুশ সেনাকে। বোমাবর্ষণ করা হয়েছিল ওই অঞ্চলে। এরপরই রাশিয়ার সেনাবাহিনী এলাকায় তল্লাশি শুরু করে।
আর তখনই মাইকোলার বাড়িতে হাজির হয় সেনা। তাঁদের বোন ইরিনা সেখানে না থাকলেও তাঁর অন্য দুই সহোদর ইয়েভেন ও দিমিত্র সেখানে ছিলেন। ইয়েভেনের কাছে সেনার ব্যাগ ছিল। তাছাড়া তাঁদের ঠাকুরদা ইউক্রেনীয় সেনায় যুক্ত থেকে পদকও পেয়েছিলেন। সেসব দেখতে পেয়ে রুশ সেনার মনে হয় এই তিন ভাই কিছু লুকোতে চাইছেন। এরপরই শুরু হয় নির্যাতন।
মাইকোলার দাবি, জ্ঞান না হারানো পর্যন্ত চলে অত্যাচার। পরে জ্ঞান ফিরলে তাঁরা নিজেদের আবিষ্কার করেন একটি বেসমেন্টে। সেখানে টানা তিন দিন ধরে চলে জেরা। চতুর্থ দিন ফের শুরু হয় মারধর। হাত-পা বেঁধে তিনজনকে নিয়ে যাওয়া হয় এক নির্জন প্রান্তরে। শুরু হয় গুলি চালানো। পাশেই খোঁড়া হয়েছে কবর। ইয়েভেন ও দিমিত্রর নিথর দেহ একে একে সেই কবরে পড়ে যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে। কিন্তু মাইকোলা প্রাণে বেঁচে যান। তাঁর কান ও গাল ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় গুলি। কিন্তু তিনি জীবিতের ভান করে মাটিতে পড়ে যান। এরপরই তাঁর দেহ লাথি মেরে কবরে ফেলে দেয় রুশ সেনা। তারপর মাটিচাপা দিয়ে দেয়।
জীবন্ত কবরে শুয়ে পড়তে হয়েছিল মাইকোলাকে। হাত ও পা বাঁধা। চোখের সামনে মৃত্যুকে দেখেও কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। কোনও মতে সেখান থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করেন। মাঠের ধারের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন রাতে। পরে অবশ্য সুস্থ হয়ে ফিরে যান বাড়িতে। নিজের এই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মাইকো বলেছেন, ”এই গল্প সকলেরই শোনা উচিত। কেবল ইউক্রেনই নয়, সারা পৃথিবীতেই এমন ঘটনা ঘটে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.