সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই যুদ্ধ থামছে না ইউক্রেনে। লড়াইয়ের প্রাথমিক অভিঘাত সরিয়ে যত তদন্ত এগোচ্ছে, তত উঠছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ। রুশ সেনার হাতে বন্দি বহু ইউক্রেনীয় মহিলাই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন বলে দাবি। এহেন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের ‘ফার্স্ট লেডি’ ওলেনা জেলেনস্কা দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয় মেয়েদের ধর্ষণ করতে স্ত্রীরাই রুশ জওয়ানদের উসকানি দিচ্ছে।
ব্রিটিশ বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই নিউজ’ সূত্রে খবর, সম্প্রতি লন্ডনে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কা। ওই সেমিনারে আলোচ্য বিষয় ছিল ‘যুদ্ধের হাতিয়ার ধর্ষণ’। আলোচনায় ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রসঙ্গ টেনে ৪৪ বছরের ওলেনা বলেন, “কারও উপর ক্ষমতা প্রদর্শনের সবচেয়ে বর্বর ও জান্তব পন্থা হচ্ছে যৌন হিংসা। যুদ্ধের সময় যাঁরা এই ধরনের হামলার শিকার হন, তাঁরা নিরাপত্তার খাতিরেই মুখ খোলেন না।” রুশ ফৌজের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনে তিনি আরও বলেন, “রুশ জওয়ানদের ইউক্রেনীয় মেয়েদের ধর্ষণ করতে বলছেন তাঁদের স্ত্রীরাই। যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ধর্ষণকে ব্যবহার করছে তারা। আর এনিয়ে কোনও রাখঢাকও করছে না রাশিয়ার সেনারা।”
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার মাস দুয়েক পরেই একটি অডিও ক্লিপ শেয়ার করেছিল ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী। শিরোনাম ছিল- ‘সিকিউরিটি সার্ভিসে ধরা পড়ল: ইউক্রেনীয় মহিলাদের ধর্ষণের জন্য তাঁদের স্বামীদের ছাড়পত্র দিয়েছে রাশিয়ান আক্রমণকারীদের স্ত্রীরা।’ যদিও ৩০ সেকেন্ডের ওই বিস্ফোরক অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করা হয়নি। ১২ এপ্রিল ওই অডিও ক্লিপটি প্রকাশ্যে আনে রেডিও লিবার্টি নামের এক সংস্থা।
প্রসঙ্গত, বুচা শহরের গণহত্যা (Bucha massacre) নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব হয়েছে গোটা বিশ্ব। ইউক্রেনের তরফে জানানো হয়েছিল, বহু মহিলাকেই বুচা বেসমেন্টে আটক করে রেখেছিল রুশ বাহিনী। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। সমর বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানী কিয়েভের দখল নিতে না পেরেই নির্বিচারে পাশের শহরগুলিতে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে রুশ সেনা।
অন্যদের মতে, গণহত্যা এবং গণধর্ষণের মতো এই যে ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসছে, তা রেগুলার আর্মি বা পেশাদার রুশ সেনার কাজ নয়। কেননা, যে কোনও দেশের সেনাবাহিনিরই কিছু নির্দিষ্ট নীতি বা মিলিটারি কোড অফ কনডাক্ট থাকে। অপরদিকে, পুতিন ইউক্রেনে যে চেচেন সেনা পাঠিয়েছিলেন, তারা নীতি বা নৈতিকতার কোনও ধার ধারে না। অর্থাৎ মানবাধিকার রক্ষা বা কোড অফ কন্ডাক্ট রক্ষার দায় তাদের নেই। মূলত এই চেচেন সেনাদের হাতেই এমন ধ্বংসলীলা সাধিত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.