Advertisement
Advertisement

Breaking News

Russia

রুশ বায়ুসেনার হলটা কী? ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিন বাহিনীর কৌশল নিয়ে ধন্দে সমর বিশেষজ্ঞরা

এখনও কিয়েভ দখল করতে পারেনি পুতিন বাহিনী।

Ukraine War: What Happened To Russia's Air Force? | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 2, 2022 11:34 am
  • Updated:March 2, 2022 3:02 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় এক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এখনও কিয়েভ দখল করতে পারেনি পুতিন বাহিনী। ডেভিড বনাম গোলিয়াথের এই অসম লড়াইয়ে পুতিনের ফৌজের কৌশল নিয়ে রীতিমতো ধন্দে সমর বিশেষজ্ঞরা। প্রশ্ন উঠছে, শক্তিশালী রুশ বায়ুসেনার হলটা কী? কেনই বা ইউক্রেনে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে না তারা? তুলনায় শিশু ইউক্রেনীয় এয়ারফোর্সকে কেনই বা বাগে আনতে হিমশিম খাচ্ছে? 

[আরও পড়ুন: যুদ্ধের আবহে এবার ‘তেল দেবেন’ বাইডেন]

শুরুর দিকে মার্কিন ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলির ধারণা ছিল, যুদ্ধ শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনের এয়ারফোর্স ও মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমগুলিতে ভয়াবহ বিমানহানা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেবে রুশ বায়ুসেনা। আকাশসীমা শত্রুহীন করার পরই বাঁধ ভাঙা জলের মতো ইউক্রেনে প্রবেশ করবে রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি। এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের বায়ুসেনা। দেশটির ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ কাজ করছে। ইতিমধ্যে, রাশিয়ার ১৪টি যুদ্ধবিমান ও ২৬টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার গুলি করে নামানোর দাবিও করেছে কিয়েভ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ঘোস্ট অফ কিয়েভ’ নামের এক ইউক্রেনীয় পাইলটকে নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। ওই পাইলট একাই নাকি ছ’ টি রুশ বিমান ধ্বংস করেছেন। যদিও এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সামরিক শক্তির খতিয়ান দিলে, রাশিয়ার বিমানবাহিনীতে হাজার চারেক বিমান রয়েছে। তুলনায় ইউক্রেনের কাছে রয়েছে মাত্র ৩০০টি যুদ্ধবিমান। ফলে মার্কিন আধিকারিক-সহ সমর বিশেষজ্ঞরাও রীতিমতো ধন্দে।

সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনের ‘RUSI’ থিংকট্যাঙ্ক। ‘দ্য মিস্টিরিয়াস কেস অফ দ্য মিসিং রাশিয়ান এয়ারফোর্স’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমরসূত্র মেনে যুদ্ধের শুরুতেই ইউক্রেনের এয়ারফোর্স ও মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমগুলিকে গুঁড়িয়ে দেবে রাশিয়া বলে ভাবা হয়েছিল। ১৯৩৮ সালের পর প্রায় সমস্ত যুদ্ধে এমনটাই দেখা গিয়েছে। কিন্তু এবার সেরকম ঘটনা দেখা যাচ্ছে না। বরং অনেক ক্ষেত্রেই পালটা হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেনের যুদ্ধবিমানগুলি। কেনই বা মস্কো যুদ্ধবিমান মোতায়েন নিয়ে এত সতর্ক?

Advertisement

আমেরিকার ধারণা, ইউক্রেনে হামলা চালাতে মাত্র ৭৫টি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে রাশিয়া। ‘ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর রুশ মিলিটারি বিশেষজ্ঞ রব লি’র বক্তব্য, “ওরা (রাশিয়া) যুদ্ধে এমন কিছু পদক্ষেপ করছে যা রীতিমতো ধন্দ জাগানো। যুদ্ধের শুরুতেই সর্বশক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা ছিল রাশিয়ার সেনাবাহিনীর। কারণ, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই আন্তর্জাতিক চাপ আসা শুরু হয়। প্রতিদিন যুদ্ধ চালাতে প্রচুর টাকা ব্যয় হয়। ফলে দ্রুত কাজ হাসিল করে যুদ্ধ শেষ করাই সবার লক্ষ্য থাকে। কিন্তু রাশিয়া সেই অর্থে ভয়ানক হামলা চালাচ্ছে না। এটা ভাবনার বিষয়।”

সমর বিশারদদের একাংশের মতে, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রুশ বায়ুসেনা ও স্থলসেনার মধ্যে সমন্বয় নেই। যুদ্ধের ময়দানে দুই বাহিনীর মধ্যে কৌশলগত বোঝাপড়া যে কতটা জরুরি, তা এবার বুঝতে পারছেন রুশ কমান্ডাররা। খারকভ, কিয়েভ-সহ অনেকে জায়গায় দেখা গিয়েছে যে ‘এয়ার ডিফেন্স কভার’ বা যুদ্ধবিমানের সুরক্ষা কবচ ছাড়াই শত্রুর এলাকায় এগিয়ে গিয়েছে রুশ পদাতিক ও ট্যাঙ্ক বাহিনী। যার ফলও ভুগতে হয়েছে তাদের। ইউক্রেনীয় ফৌজের মার্কিন ও ব্রিটিশ ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মিসাইল ও তুরস্ক থেকে কেনা ড্রোনের হামলায় বিধ্বস্ত হতে হয়েছে রাশিয়ার বাহিনীকে। কিন্তু এমনটা হওয়ার কথা নয়, রুশ ফৌজের কাছে যুদ্ধের প্রচুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদের ফৌজের হয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে রুশ বায়ুসেনা। ফলে প্রশ্ন উঠছে, শুরু থেকেই ‘এয়ার ডমিন্যান্স’ বা আকাশসীমায় আধিপত্য স্থাপনের চেষ্টা কেন করেনি রাশিয়া?

অন্যদিকে, প্রাক্তন রুশ উপ-বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রেই ফেদরোভ বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ২ মার্চের মধ্যেই জয়ের মধ্য দিয়ে এ অভিযান শেষ করতে চান। কিন্তু তা যে হচ্ছে না তা এখন স্পষ্ট। ইউক্রেনের দুর্দান্ত লড়াই সকলের প্রত্যাশা ছাপিয়ে গিয়েছে। যেভাবে দেশটির বায়ুসেনা ও স্থলসেনা লড়াই করছে তা তাক লাগানো। বিগত আট বছর ধরে দোনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনী লড়াই চালাচ্ছে। তাদের কিছুটা অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু সেই লড়াই অনেকটাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাঠে ময়দানে হওয়া লড়াইয়ের মতো। সেখানে সেই অর্থে বায়ুসেনার ব্যবহার হয়নি। ফলে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের তেমন অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির নেতৃত্বে ইউক্রেনীয় বাহিনীর লড়াই প্রশংসনীয়।

[আরও পড়ুন: বেলারুশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করতে পারে ইউক্রেন! সীমান্তে জেলেনস্কির সেনার প্রস্তুতি ঘিরে চাঞ্চল্য]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement