সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আত্মসমর্পণ করেছে ইউক্রেনের (Ukraine) সেনা। অবশেষে ‘মুক্ত’ মারিওপোলের আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কারখানা। শুক্রবার এমনটাই দাবি করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।
এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র ইগর কনাশেনকোভ বলেন, “১৬ মে থেকে আজভস্টাল কারখানায় লড়াই চালিয়ে যাওয়া আজভ রেজিমেন্টের ২ হাজার ৪৩৯ নাৎসি সৈনিক আত্মসমর্পণ শুরু করে। শুক্রবার অস্ত্র ফেলে দিয়েছে ওই কারখানায় লুকিয়ে থাকা শেষ ৫৩১ জন ইউক্রেনীয় সেনা। আত্মসমর্পণ করেছে আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডারও। তাঁকে মারিওপোলের জনতার হাত থেকে বাঁচাতে একটি সামরিক গাড়িতে করে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজভস্টাল কারখানার নিচে থাকা বাঙ্কারগুলি এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।” তিনি আরও জানান, আজভস্টালে লড়াই শেষ হওয়ার কথা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু।
উল্লেখ্য, প্রায় দু’মাস ধরে চলা লড়াইয়ের পর গোটা মারিওপোল শহরই এখন রুশ বাহিনীর দখলে। শুধু বন্দর শহরটির আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্রে ঘাঁটি গেড়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনার বিশেষ বাহিনী আজভ রেজিমেন্ট ও ৩৬ মেরিন ব্রিগেড। কিন্তু তাঁদের অধিকাংশই আহত। পানীয় জল, খাবার ও গোলাবারুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। ওই ইস্পাত কারখানার নিচে সোভিয়েত আমলে তৈরি সুড়ঙ্গে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। রয়টার্স সূত্রে খবর, মারিওপোলে আটকে থাকা সৈনিকদের লড়াই থামানোর নির্দেশ দিয়েছে জেলেনস্কি সরকার। কিন্তু সংঘর্ষ থামছে না। তবে, রাশিয়ার দাবি মেনে আদৌ ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা হাতিয়ার ফেলে দিয়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এনিয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি কিয়েভ।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে মারিওপোল (Mariupol) শহরকে ‘মুক্ত’ করার দাবি করে। তার জন্য উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোল। কারণ, রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রুশপন্থীদের কব্জায় থাকা ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকাকে (দোনবাস অঞ্চল) যুক্ত করতে চায় মস্কো। এই যোগসাধনের জন্য প্রয়োজন বন্দর শহর মারিওপোলে দখল কায়েম করা। সেই কারণেই শহরটি রাশিয়ার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত, মারিওপোল দখলের লড়াইয়ে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.