ছবি সৌজন্য: AFP
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার (Russia) বিরুদ্ধে যুদ্ধের ভয়ঙ্কর পরিণতি ও নৃশংসতা দেখে আর স্থির থাকতে পারছেন না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জ্বালাময়ী ভাষণে তিনি একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন।
এদিন রুশ বর্বরতার ভিডিও দেখিয়ে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন জেলেনস্কি। যাতে তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপে বাধা দিতে না পারে নিরাপত্তা পরিষদের এই স্থায়ী সদস্য দেশটি। এরপরেই তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, আন্তর্জাতিক আইন মেনে অবিলম্বে পদক্ষেপ করুন। না পারলে সবাই মিলে ইস্তফা দিয়ে রাষ্ট্রসংঘ ভেঙে দিন। বুচা শহরে রুশ কর্মকাণ্ড ইসলামিক স্টেটের মতো সন্ত্রাসবাদীদের কাজ বলে মন্তব্য করে তঁার মন্তব্য, রাশিয়াকে আটকানোর যদি কোনও বিকল্প না থাকে, তাহলে একমাত্র কাজ নিরাপত্তা পরিষদ ভেঙে দেওয়া। রাষ্ট্রসংঘ বন্ধ করে দেওয়া।
ইউক্রেনের বুচা শহরে রুশ সেনাদের নারকীয় অত্যাচারের দৃশ্য দেখে সারা বিশ্ব শিউরে উঠেছিল। রাস্তায় পড়ে থাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিথর দেহ সরিয়ে গণকবর দেওয়ার কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তার মধ্যেই মঙ্গলবার কিয়েভের উপকণ্ঠে মটিজিনে একটি কবর থেকে হাত-বাঁধা পাঁচটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে স্থানীয় মেয়রের দেহও রয়েছে বলে ইউক্রেন সরকারের দাবি। এরই মধ্যে জেলেনস্কি জানালেন বরোদিয়াঙ্কার পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা। তিনি বলেন, “এই শহরগুলির মানুষ কীভাবে রুশ বাহিনীর হাতে অত্যাচারিত হচ্ছেন তার যাবতীয় তথ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে আনতে চাই। সাংবাদিকরা এই সব শহরে আসুন। গোটা বিশ্বকে জানান রাশিয়া আমাদের প্রিয় ইউক্রেনের কী অবস্থা করেছে।” একই আশঙ্কা ন্যাটো প্রধান জেন স্টোলটেনবার্গেরও।
এদিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যেই সর্বসমক্ষে এসেছে মমর্স্পশী একটি ছবি। বাইরে মুহুর্মুহু বোমা পড়ছে। যে কোনও সময় মৃত্যু হতে পারে। পরিবারের কে কোথায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে। দু’বছরের একরত্তি মেয়েটা ঠিক বেঁচে যাবে নিশ্চয়ই? এই আশা নিয়েই ইউক্রেনের সাশা মাকোভি তাঁর ন্যাপি পরে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ের পিঠে পেন দিয়ে লিখে দিয়েছিলেন, ‘নাম, বিরা মাকোভি। জন্ম ১০.১১.১৯।’ আর লিখে দেন, তাঁর ও তাঁর স্বামী-সহ পরিবারের কয়েকজনের ফোন নম্বর। এই ছবি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সাশা আরও জানান, একটি কাগজে বিরার নাম-ঠিকানা-পরিচয় ও তার বাবা-মা-আত্মীয়র ফোন নম্বর লিখে তার জামার সঙ্গেও আটকে দিয়েছিলেন। অবশ্য ছবিটি এখন তোলা নয়। যুদ্ধের প্রথম দিনেই এভাবে লিখে দিয়েছিলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.