সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার কার্স্ক অঞ্চলে ৩০ কিমি ভিতরে ঢুকে পড়েছে ১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা। মোতায়েন করা হয়েছে দুডজন সাঁজোয়া গাড়ি। রয়েছে অত্যাধুনিক ট্যাঙ্কও। যা এখন চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে মস্কোর কপালে। হাজার হাজার মানুষকে সেখান থেকে সরাচ্ছে রুশ প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হুঙ্কার দিয়ে জানালেন, রুশ ভূখণ্ডে ঢুকে এই অভিযান ‘ন্যায়ের পুনরুদ্ধার’।
কয়েকদিন আগে মার্কিন গবেষণা সংস্থা দ্য ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার এক রিপোর্ট দিয়ে জানায়, দক্ষিণ রাশিয়ার কার্স্ক অঞ্চলে আক্রমণ শানাচ্ছে ইউক্রেন। সেখানে হাজার খানেক সেনা ও দুডজন সাঁজোয়া গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে অত্যাধুনিক ট্যাঙ্কবাহিনীও। তার পরই রুশ সেনার এক জেনারেল জানান, “কার্স্কের ৩০ কিমি ভিতরে ঢুকে পড়েছে ইউক্রেনের সেনা। সেখানে তাঁরা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও তাদের পালটা মার দিচ্ছি। খুব তাড়াতাড়ি আমরা ইউক্রেনীয় সেনাকে ওই অঞ্চল থেকে হঠিয়ে দেব।” গতকাল অবশেষে এনিয়ে মুখ খোলেন জেলেনস্কি।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, “ইউক্রেন এটাই প্রমাণ করছে যে আমরা ন্যায় পুনরুদ্ধার করতে পারি। আক্রমণকারীর উপর যেকোনও ধরনের চাপ তৈরি করতে আমরা সব সময় প্রস্তুত।” জানা গিয়েছে, রুশ ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিতেই হামলা চালিয়েছে। যার জন্য প্রস্তুত ছিল নাম মস্কো। পালটা আক্রমণ শানাচ্ছে রুশ ফৌজও। ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে মিসাইল। ইতিমধ্যেই আহত হয়েছেন ১৩ জন। ফলে দুবছর ধরে চলা এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট হয়ে উঠেছে কার্স্ক। তাই এখন আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, এবার কি রুশ সেনাকে ধরাশায়ী করে এই অঞ্চল দখল করে নেবে ইউক্রেন?
গত জুন মাসে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামিয়ে শান্তির পথ খুঁজতে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় ‘ইউক্রেন পিস সামিট’। যার নিটফল শূন্যই বেরোয়। ফলে বিভিন্ন দেশের হস্তক্ষেপেও এর কোনও রফাসূত্র মেলেনি। দুদেশের সংঘাত অব্যাহত। সুইজারল্যান্ডের শান্তি বৈঠকের আগে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কিয়েভকেই শর্ত বেঁধে দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর বক্তব্য ছিল, “আমরা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতেই পারি। কিন্তু তার জন্য ইউক্রেনকে নেটোতে যোগদানের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। তাহলেই আমরা আলোচনায় বসতে পারি। ডোনেটস্ক, লুহানস্ক, জাপরিজজিয়া ও খেরসন থেকে পুরোপুরীভাবে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে ইউক্রেনকে। তবেই আমরা শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে বৈঠকে বসব।” কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই এতে সম্মত হয়নি কিয়েভ। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ায় ঢুকে হামলা চালিয়ে ইউক্রেন বুঝিয়ে দিয়েছে যে, এই যুদ্ধে তারা সহজে হার মানবে না। যা জেলেনস্কির বক্তব্য থেকেও স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.