সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘হাউজ অফ কমনস’-এ সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন জোগাড় হয়েছিল আগেই। এবার খাতায়-কলমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে ব্রিটেন বেরিয়ে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গেল পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটাভুটিতে। আগামী ৩১ তারিখই শেষদিন। তারপরই পাকাপাকিভাবে ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর হচ্ছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যরা ভোট দিয়ে পাশ করালেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ব্রেক্সিট প্রস্তাব। ভোটের ফলাফল ৩৩০ – ২৩১। ‘হাউজ অফ লর্ডস’-এ পাশের পর আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আইন তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা। তবে মধ্যবর্তী সময়টুকু EU-এর নিয়ম মেনে চলতে পারে ব্রিটেন।
এর আগে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ‘হাউজ অব কমনস’-এ সুকৌশলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আদায় করে নিয়েছিলেন বরিস। সেখানে চুক্তির পক্ষে ভোট পড়ে ৩৫৮টি এবং বিপক্ষে ২৩৪টি। যার ফলে EU থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। এখন উচ্চকক্ষের পরীক্ষা বাকি ছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তারও নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। এই ফলাফলের পর ব্রেক্সিট সংক্রান্ত মন্ত্রী স্টিফেন বার্কলের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘ব্রেক্সিট হয়ে গেল। বিলও পাশ হয়ে গিয়েছে।’ তবে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দার লিয়েন স্পষ্টই জানিয়েছেন, ওই সময়ের মধ্যে পূর্ণ চুক্তি রূপায়িত করা বাস্তবিকই অসম্ভব। ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘ব্রেক্সিট আমরা পছন্দ করছি না। কিন্তু ব্রিটেনের জনসাধারণের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করি। তবে একটা বিষয় সম্পর্কে আমাদের কোনও সংশয় নেই যে আমাদের নিয়মাবলি বিশেষত পরিবেশ, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিয়ম ব্রিটিশরা একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এর জন্য গঠিত আলাদা দপ্তরও তুলে নেবে ব্রিটিশ সরকার। তবে, EU ছাড়লেও ২০২০ সালে ১১ মাসের ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ বা EU-এর সঙ্গে ভবিষ্যতের কর্মপন্থা ঠিক করা নিয়ে আলোচনা চালাবে ব্রিটেন। ব্রাসেলসের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আদায় করতে না পারলেও আগামী বছরের ৩১ ডিসেম্বরের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না। তবে ব্রেক্সিট কার্যকরী হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য এবং আবগারি নিয়ম মেনে চলবে ব্রিটেন। তবে EU পার্লামেন্টে ব্রিটেনের কোনও প্রতিনিধি থাকবেন না। এবং সেখানে নেওয়া কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত লন্ডন মানতে বাধ্য হবে না।
গত তিন বছর ধরে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের টানাপোড়েনের ইতি পড়া আর সামান্য সময়ের অপেক্ষামাত্র। শুধুমাত্র ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর করবেন, গত বছর এই প্রতিশ্রুতি এবং জেদ নিয়েই টেরেসা মে’র পর ১০ নং, ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশ করেছিলেন বরিস জনসন। সাড়ে পাঁচশোর মধ্যে ৩২৬ টি আসনে জেতার পর তিনি প্রত্যয়ী সুরে জানিয়েছিলেন যে ব্রেক্সিটের রাস্তা মসৃণ করবেন। সেই জেদ বজায় রাখলেন। নানা প্রতিরোধের মধ্যেও জনসমর্থন আদায় করেই ছাড়লেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.