সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের রাতে আকাশের দিকে চোখ রেখেছিলেন কোটি কোটি বিশ্ববাসী। গত ৩১ জানুয়ারি রাতে ঐতিহাসিক ‘সুপার ব্লু ব্লাড মুন’ প্রত্যক্ষ করতে শুধু সাধারণ মানুষ নন, নামীদামি জ্যোর্তিবিজ্ঞানী, জনপ্রিয় ‘এলিয়েন হান্টার’রাও শক্তিশালী টেলিস্কোপের সাহায্যে নজর রাখছিলেন অন্তরীক্ষে। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা-র চন্দ্রগ্রহণের ‘লাইভ ভিডিও ফিড’ও শেয়ার করে। আর সেই ভিডিওতেই দেখা গেল এক চাঞ্চল্যকর দৃশ্য! অত্যুৎসাহীদের দাবি, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের রাতে চাঁদের পাশ কাটিয়ে খুবই দ্রুতগতিতে একটি UFO বা ভিনগ্রহের যানকে চলে যেতে দেখা গিয়েছে।
একটি ইউটিউব চ্যানেলের দাবি মোতাবেক, নাসার লাইভ ব্রডকাস্টেই এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। একটি রহস্যময় স্পেসশিপ গোছের যান দ্রুতগতিতে চাঁদের কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। খুবই অল্প সময়ের জন্য এই দৃশ্য নাসার টেলিস্কোপে ধরা পড়লেও ঘটনাটি সাড়া ফেলে দেওয়ার মতো বলেই দাবি অত্যুৎসাহীদের। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, ‘খুবই দ্রুতগতিতে একটি রহস্যময় বস্তু চাঁদের বাঁ দিক ঘেঁষে বেরিয়ে যেতে থাকে। কয়েক মুহূর্তের জন্য দৃশ্যটি ধরা পড়ে। বস্তুটি ক্রমশই নাসার টেলিস্কোপের ফ্রেমের বাইরে বেরিয়ে যেতে চাইছিল মনে হয়।’ অনেকেই এই ভিডিও দেখে নিজের মতামত জানিয়েছেন। কেউ কেউ এর সমালোচনাও করেছেন। বেশ কয়েকজন একে এডিটিংয়ের কারসাজি বলেও দাবি করেছে। ডেভিড নামের এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘বস্তুটির গতি দেখলে তাজ্জব হতে হয়। যেভাবে অতটা দূরত্বকে টপকে বেরিয়ে গেল চাকতিটি, আমার তো মনে হয় বস্তুটি আলোর সমান বেগে ছুটছিল।’ ইন্টারনেটের দৌলতে ভিডিওটি দেখে ফেলেছেন বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারীও।
যদিও তাঁর মতে, এতে ভিনগ্রহের যান বা অন্য গ্রহের প্রাণীদের নিয়ে জল্পনা বাড়ানোর চেষ্টা বৃথা। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সঙ্গেও এর কোনও সম্পর্ক নেই। আকাশে মেঘ ও আলোর তারতম্যের জন্য এমন কোনও দৃশ্য দেখা যেতে পারে। কিন্তু ভিনগ্রহের কোনও জীব বা যান পৃথিবীতে দেখা গিয়েছে, এমন কোনও সত্য ঘটনা তাঁর জানা নেই। কেউ কেউ আবার ওই উড়ন্ত বস্তুকে বিমান বা সেনার এয়ারক্রাফট বলেও দাবি করেছেন। যেমন ডেভিড। তিনি বলছেন, ‘জল্পনায় জল ঢেলে দেওয়ার জন্য দুঃখিত, কিন্তু আমার মনে হয় ওই বস্তুটি কোনও বিমান।’ আর একজন ওই রহস্যময় যানটিকে বোয়িং এরোপ্লেন বলে মনে করছেন। জল্পনা আরও বেড়েছে কারণ, যেদিন ওই ‘UFO’ দেখা গিয়েছে, মহাকাশ বিজ্ঞানে সেই দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাতটি ছিল ‘সুপার ব্লু ব্লাড মুন’-এর রাত।
আদতে তিনটি মহাজাগতিক ঘটনার সমন্বয় এটি। ‘সুপার মুন’ অর্থে চাঁদ যখন পৃথিবীর সবথেকে কাছাকাছি এসে ধরা দেয়। ‘ব্লু মুন’ কথার অর্থ একই মাসে যখন দ্বিতীয়বার পূর্ণিমা হয়। আর ‘ব্লাড মুন’ মানে যখন চাঁদ রক্তবর্ণ ধারণ করে। ৩১ জানুয়ারি একযোগে এই তিন মহাজাগতিক ঘটনাই ঘটতে দেখা যায়। রক্তাভ চাঁদ দেখা যায় আকাশে। এবং সুপার মুন হওয়ার কারণে তা আকারে বেশ বড় হিসেবেই দেখা যায়। এই বৃদ্ধির পরিমাণ সাত শতাংশ। অর্থাৎ সাধারণভাবে চাঁদকে যে আকারের দেখা যায় তার থেকে সাত শতাংশ বড় আকারের চাঁদ দেখা যায় ওই দিন। চাঁদের ঔজ্জ্বল্যও ছিল অনেকটা বেশি। গ্রিফিথ অবজারভারভেটরি কেন্দ্র থেকে মূল ভিডিওটি তোলা হয়েছিল। সেই ভিডিওটি থেকেই এই চাঞ্চল্যকর দৃশ্যটুকু কেটে নিয়ে ইউটিউবে আপলোড করেছেন এই উৎসাহী। বস্তুত, ভিনগ্রহের যান নিয়ে পর্যবেক্ষকদের একাংশের মধ্যে তুমুল উৎসাহ রয়েছে। ভিনগ্রহে কি সত্যি প্রাণ রয়েছে? রয়েছে কি মানুষের মতো বুদ্ধিমান কোনও প্রাণী? এই প্রশ্নের উত্তর হন্যে হয়ে খুঁজছেন অত্যুৎসাহীরা। উঠে এসেছে নানা ‘কন্সপিরেসি থিওরি’ও। যাঁরা ভিনগ্রহের প্রাণীদের অস্তিত্ব বিশ্বাস করেন, খুঁজে বেড়ান- পোশাকি ভাষায় তাঁদের বলে ‘এলিয়েন হান্টার’। এরকম বহু এলিয়েন হান্টার বিশ্বের নানা প্রান্তে ভিনগ্রহের যান দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
দেখুন সেই ভাইরাল ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.