সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনে করোনা ভাইরাসের কামড়ের কথা সর্বপ্রথম তাঁরাই জানিয়েছিলেন গোটা বিশ্বকে। তাঁদের প্রতিবেদনে সকলে জানতে পারছিলেন চিনের করোনা পরিস্থিতি। কাজটা কঠিন হলেও সংক্রমণ, বিপদের ভয় তুচ্ছ করে পালন করে চলেছিলেন যথার্থ সাংবাদিকের কর্তব্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন খবর, ভিডিও। চিনের সেই দুই সাংবাদিক এবার নিখোঁজ হয়ে গেলেন। কারণ অনুমান করে দেওয়া অসুবিধাজনক নয় মোটেও। ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ।
চেন কিউশি আর ফ্যাং বিন। করোনা বিধ্বস্ত চিনে এই দুই তরুণ সাংবাদিক নিজেদের কর্তব্যে অটল ছিলেন। ইউহান, করোনা আঁতুরঘর থেকে খবর সংগ্রহ করছিলেন তাঁরা। সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষত টুইটারে ভিডিও পোস্ট করছিলেন। তাতে লক্ষ লক্ষ রিটুইট। এমনকী শত্রুদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ছিল তাঁদের খবর। রোষ বাড়ছিল জিনপিং প্রশাসনের। দু’জনের উপরই চলছিল কড়া নজরদারি। এমনই এক পরিস্থিতিতে আচমকা নিখোঁজ ফ্যাং বিন, চেন কিউশি। ফ্যাংয়ের খোঁজ নেই সেই শুক্রবার থেকে। আর চেনের খবর মিলছে না প্রায় একদিন।
সূত্রের খবর, কাজের স্বার্থে চেন একটি হাসপাতালে গিয়ে ভিডিও তুলছিলেন। সেখানে তাঁকে বাধা দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্মীদের তরফে। সেখানে থেমে থাকেননি তাঁরা। পরে চেনের বাড়িতেও হামলা চলে। বাড়ির দরজা-জানলা ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর থেকে নিখোঁজ চেন। পরিবারের সন্দেহ, প্রকৃত খবর সরবরাহ করার জন্যই চেনের উপর ক্ষোভবশত তাঁকে গুম করে দেওয়া হয়েছে। ছেলেকে ফিরে পেতে মরিয়া মা।
এমনিতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার এবং তাতে নজরদারির ক্ষেত্রে চিন অত্যন্ত কড়া। চুপিসাড়ে দেশবাসীর উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখে। সেখানে উইবু, উইচ্যাটের মতো পৃথক সোশ্য়াল মিডিয়া আছে। সাধারণ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা যায় না। কারও প্রতি কোনও সন্দেহ হলে, তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট আপাতভাবে বন্ধ করে দেওয়ারও নজির আছে।
নিজেদের দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকট মোকাবিলায় কার্যত ব্যর্থ চিন। শত চেষ্টা সত্ত্বেও শাক দিয়ে আর মাছ ঢাকা যাচ্ছে না। বেহাল দশাটা একটু একটু করে বেরিয়েই আসছে। আর তার জেরেই দুই সাংবাদিকের কণ্ঠরুদ্ধ করার মরিয়া প্রয়াস প্রশাসনের। ফ্যাং আর চেনের নিখোঁজের ঘটনায় তেমনই ব্যাখ্যা উঠে আসছে। সাংবাদিকদের হয়ে মাঠে নেমেছে মানবাধিকার কমিশন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.