সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহে তুরস্কে বড়সড় পট পরিবর্তন। তুরস্কের আদালতের নির্দেশে ইস্তানবুলের ষষ্ঠ শতাব্দীর বিখ্যাত স্থাপত্য হেগিয়া সোফিয়া (Hagia Sophia) মিউজিয়ামকে মসজিদে পরিবর্তিত করছে তুরস্ক সরকার। আদালতের নির্দেশে আর এই সাবেক কনস্ট্যান্টিনোপলের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের মিউজিয়ামের মর্যাদা থাকছে না। বরং প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগানের (Recep Tayyip Erdogan) নির্দেশে একে মসজিদে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিশ্বের খ্রিস্টান সমাজ। কারণ, ইউনেস্কো স্বীকৃত এই হেরিটেজ স্থাপত্য একসময় বাজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীনে একটি ক্যাথিড্রাল ছিল। পরে অটোমান তুর্কিরা কনস্ট্যান্টিনোপল দখল করার পর সম্রাট মেহমেদের নির্দেশে পঞ্চদশ শতকে এই স্থাপত্যকে মসজিদে পরিণত করা হয়।
১৯৩৪ সালে বিপ্লবের পর আধুনিক তুরস্কের রূপকার সেক্যুলার নেতা মুস্তাফা কামাল আতাতুর্কের জমানায় এই হেগিয়া সোফিয়াকে মিউজিয়াম হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, তারপর থেকে এটি তুরস্কের গর্বের সঙ্গে যুক্ত একটি স্থাপত্য। ইস্তানবুলের অন্যতম পর্যটনস্থল হিসাবে হেগিয়া সোফিয়া পরিচয় পায়। প্রতি বছর ৩৭ লক্ষ মানুষ, মুসলিম ও খ্রিস্টান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এই মিউজিয়াম পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু সরকারের নির্দেশে, বর্তমানে হেগিয়া সোফিয়া মুসলিমদের প্রার্থনাস্থলে পরিণত হতে চলেছে। প্রায় ৯০ বছর পর এখানে ফের নমাজ পড়বেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা।
নয়া আদেশনামায় স্বাক্ষর করার টুইটারে সেটি শেয়ার করে এরদোগান লেখেন, ‘হায়ির্লি ওলসুন’ যার অর্থ অভিনন্দন। তবে কি দেশের মুসলিম সমাজকে খুশি করতেই এই পদক্ষেপ? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। এদিকে, সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে ইউনেস্কো। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের নিদর্শন এই ঐতিহাসিক স্থাপত্যকে মসজিদে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবও দিয়েছে তারা। বিবিসি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারের সিদ্ধান্তের পর হেগিয়া সোফিয়ায় প্রথম নমাজ পাঠের জন্য বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়েছে। এমনকী স্থাপত্যের বাইরে বহু মানুষ জড়ো হয়ে আল্লা-হু-আকবর ধ্বনি তোলেন বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.