সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন হামলায় খতম হয়েছিল দুই ছেলে। তারপর জালে পড়ে বোন। এবার তুর্কি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার স্ত্রী। নিহত আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির বংশ কার্যত বিলুপ্তির পথে। বুধবার বাগদাদির স্ত্রী আসমা ফাওজি মহম্মদ আল-কোবায়সির গ্রেপ্তারির কথা জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোগান।
রাজধানী আঙ্কারায় একটি বক্তৃতায় এরদোগান বলেন, ‘ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী ও তুরস্কের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জঙ্গিদের রেহাই দেওয়া হবে না। সিরিয়ায় লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে আমাদের ফৌজ। এবার আমরা বাগদাদির স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছি।’ শুধু তাই নয়, পরোক্ষে আইএস প্রধানকে হত্যার পর আমেরিকার বুক চাপড়ানো নিয়েও কটাক্ষ করেন এরদোগান। তাঁর কথায়, সন্ত্রাসদমনে তুরস্ক যে সাফল্য পেয়েছে তা সবসময় ঢাকঢোল পিটিয়ে জহির করা হয় না। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে লেবাননে বাগদাদির এক প্রাক্তন স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তারক্ষীরা। তবে বছরখানেক পর আল কায়দার সঙ্গে বন্দি বিনিময়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাঅৎকরে নিহত আইএস প্রধানের এক শ্যালক মহম্মদ আলি সাজিদ জানিয়েছিল। গত বছর পর্যন্ত বাগদাদির চারজন স্ত্রী ছিল। পড়ে সেই সংখ্যা বেড়ে থাকতেও পারে। উল্লেখ্য, কয়কডিং আগেই উত্তর সিরিয়ার অজাজ শহরের এক ডেরা থেকে বাগদাদির বোনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধরা পড়ার সময় তার সঙ্গে ছিল তার পাঁচ সন্তান। তুরস্ক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বাগদাদির বোনকে জেরা করে আইএস সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
২০১৪ থেকে ‘১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করত বাগদাদি। নিজেকে খলিফা বলে দাবি করত ওই জঙ্গিনেতা। পরে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী আইএস-এর অধীনে থাকা এলাকা পুনর্দখল করে। জানা যায়, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যেই আফগানিস্তানে জিহাদি প্রশিক্ষণ নেয় বাগদাদি। নব্বইয়ের দশকে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ছাত্র ছিল বাগদাদি। ২০০৩ সালে মার্কিন বাহিনী যখন ফের ইরাকে অভিযান শুরু করে তখন বাগদাদি অবশ্য পুরোপুরি জঙ্গি। ২০০৪ সালে তাকে প্রথম এবং শেষবারের জন্য গ্রেপ্তার করেছিল মার্কিন বাহিনী। পাঠানো হয়েছিল বুক্কা ক্যাম্পে, সেখানে ১০ মাস কাটায় বাগদাদি। তখন বেশিরভাগ সময়ই ধর্মীয় চর্চা করত বাগদাদি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির নেতাদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ঘটে। বুক্কা ক্যাম্প থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ইরাকের আল কায়দা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বাগদাদি। যদিও, পরে ওই জঙ্গি সংগঠন ভেঙে দিয়ে তার নাম রাখা হয় আইএস। বিরোধী গোষ্ঠীগুলিকে এক জায়গায় আনার ক্ষমতা, ধর্মীয় পড়াশোনা- সমস্ত কিছু বাগদাদিকে নেতা হিসাবে উঠে আসতে সাহায্য করেছিল।
[আরও পড়ুন: জেহাদি হামলায় রক্তাক্ত থাইল্যান্ড, মৃত কমপক্ষে ১৫]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.