সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেঁচে থাকার স্বাদ যে বড় মধুর। যে কোনও মূল্যে তাই বেঁচে থাকাটাই জীবের প্রাথমিক লক্ষ্য। যে নিঃশ্বাস নিতে পারে, সে-ই চায়, পৃথিবীর হাওয়া থেকে শেষতম শ্বাস যেন শরীরে ঢোকে। জীবন কতখানি মূল্যবান, আর তাকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ যে সংগ্রামের জন্ম দিতে পারে, নতুন করে এই চিরকালীন দর্শন বুঝিয়ে দিচ্ছে আজকের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক (Turkey)। ৯৪ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা কিশোর নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য নিজেরই মূত্র পান করেছে! শনিবার তাকে উদ্ধার করার পর এই কাহিনি শুনে শিউরে উঠছে সকলে।
গত রবিবার মাঝরাতে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে (Earthquake) কেঁপে ওঠে তুরস্ক। কম্পনের প্রভাব পৌঁছয় সিরিয়ার (Syria)বিস্তীর্ণ অংশ থেকে গ্রিনল্যান্ড পর্যন্তও। পরবর্তী সময়ে ভূবিজ্ঞানীরা হিসেব নিকেশ করে কম্পনের ভয়াবহতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান, এই ভূমিকম্পের ফলে তুরস্ক নিজের অবস্থান থেকে ৬ ফুট সরে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গোটা বিশ্ব তুরস্কের দিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সবটাই এত অন্ধকারাচ্ছন্ন নয়। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে মাঝেমাঝেই মিলছে প্রাণের (Life)সন্ধান।
ঠিক যেমন আদনান মুহম্মেত কোরকুট। কম্পনের কেন্দ্র গাজিয়ান্তেপ (Gaziantep) শহরের ১৭ বছরের ছেলেটি টানা ৯৪ ঘণ্টা ধরে চাপা পড়ে ছিল ভেঙে পড়া ইমারতের নিচে। প্রাণে বাঁচতে চিৎকার করে ডাকাডাকি করছিল। কিন্তু সেই ডাক তখনও পৌঁছয়নি উদ্ধারকারীদের কানে। খিদে আর তৃষ্ণায় ছটফট করতে থাকা কিশোর এত সংকটের মধ্যেও কিন্তু কখনওই জীবনের অন্তিম পর্ব বলে মনে করেনি। মৃত্যুর হাতে নিজেকে সমর্পণ করেনি। তেষ্টা মেটাতে সে নিজের মূত্র (Urine)পান করেছে! জীবনটা বাঁচার সুতীব্র ইচ্ছেই হয়ত তাকে এই পথ বাতলে দিয়েছে।
৯৪ ঘণ্টা পর আদনানকে যখন উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে বাইরে নিয়ে আসে, তখন সে অচৈতন্য প্রায়। তাকে খাবার দিয়ে কিছুটা সুস্থ করা হয়। আর তারপর সে জানায়, কী কঠিন সংগ্রাম করে এতটা সময় সে বেঁচেছিল। আদনানের কথায়, “আমি ওদের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। ডাকছিলাম প্রাণপণে। কিন্তু মনে মনে আশঙ্কাও ছিল, ওরা আমার কথা শুনতে পাবে তো?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.