সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজেদের মধ্যে সমস্যা মিটিয়ে ফেললে, সবচেয়ে ভাল হয়। সন্ত্রাস ইস্যুতে ভারত-পাক সম্পর্কের তিক্ততা নিয়ে এমনই পরামর্শ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার জেরে ‘ভয়ংকর পরস্থিতি’ তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য, এনিয়ে ঠিক সময়ে তিনি বিবৃতি দেবেন। ভারতীয় উপমহাদেশের এভাবে সন্ত্রাসবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠায় সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
গত ১৪ তারিখ পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর থেকে বেশ কয়েকবার ভারত-মার্কিন যৌথস্তরে আলোচনা হয়েছে টেলিফোনে। শুরু থেকেই ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। অন্তত বার দুয়েক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে ফোন করেছিলেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। দোভালকে ফোন করে বোল্টন স্পষ্ট জানান, ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে আমেরিকা। মার্কিন সংবাদমাধ্যমে বোল্টন জানিয়েছেন, “আমি অজিত দোভালের সঙ্গে কথা দু’বার কথা বলেছি। আজ সকালেও কথা হয়েছে। আমেরিকা জঙ্গি হামলায় আক্রান্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। আমরা জানিয়েছি, আমেরিকা ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে।” তিনি আরও বলেন, “ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ছে। আমরা ভারতের পাশে আছি। পাকিস্তানকে অবশ্যই জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করতে হবে। জঙ্গিদের জন্য স্বর্গরাজ্য তৈরি করতে পারে না পাকিস্তান।” জন বোল্টনের সেই কথায় সিলমোহর পড়ল খোদ প্রেসিডেন্টের কথায়। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি সবটা দেখেছি। এবিষয়ে অনেকগুলো রিপোর্ট হাতে এসেছে। আমি সঠিক সময়ে এনিয়ে বিবৃতি দেব। সবচেয়ে ভাল হয়, যদি ভারত-পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে সমস্যার সমাধান করে নেয়।” পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে হোয়াইট হাউস। বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও, নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন এবং হোয়াইট হাউসের প্রধান মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্স আলাদাভাবে ভারতের পাশে থেকে বিবৃতি জারি করেছেন।
পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে নেমেছেন মার্কিন প্রবাসী ভারতীয়রাও। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের পাকিস্তান এবং চিনের দূতাবাসের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। মোমবাতি মিছিল করেন। এর মধ্যেই আমেরিকা সফরে যাবেন সেখানকার চিনা রাষ্ট্রদূত। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোয় চিনের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা। তাই শিকাগোয় তাঁর উপস্থিতিতেই প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রবাসী ভারতীয়রা। এদিকে, সন্ত্রাস দমনে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও। পাকিস্তানের আশ্রয়ে থাকা জইশ প্রধান মাসুদ আজহারকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’-র তকমা দিতে চায় ফ্রান্স। এই আবেদনে তাঁরা রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে খবর। ফ্রান্সের এই প্রস্তাবকে সমর্থন করছে আমেরিকা, ব্রিটেন। হামলার নিন্দায় নিজেদের আইনসভায় নিন্দাপ্রস্তাব পাশ করাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। সবমিলিয়ে, পাকিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিক স্তরে কূটনৈতিক চাপ ক্রমশই বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.