সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নজিরবিহীন, অভূতপূর্ব! প্রকাশ্যে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও প্রাক্তন মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন। প্রাক্তন শীর্ষ আমলাকে বরখাস্ত করার ন’মাস পরেও ট্রাম্পের রাগ যে বিন্দুমাত্র কমেনি, শুক্রবার ফের তার প্রমাণ মিলল। নিজেরই নিয়োগ করা প্রাক্তন বিদেশ সচিবকে টুইটে, ‘জড়বুদ্ধিসম্পন্ন, পাথরের মতো নিরেট ও চূড়ান্ত অলস’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে যে নিজেরই প্রার্থী বাছাইয়ের যোগ্যতা সম্পর্কে সংশয় তৈরি হয়, সেটাও ভুলে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
[বিশ্বের সবচেয়ে সেক্সি ওয়েদার গার্লের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি বয়ফ্রেন্ডের!]
শুরুটা অবশ্য টিলারসনই করেছেন। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন এই কূটনীতিক অভিযোগ করেন, ট্রাম্প তাঁকে নানা বেআইনি কাজ করতে নিয়মিত চাপ দিতেন। আবার ট্রাম্প মুখ বন্ধ করে সমালোচনা শোনার পাত্রই নন। সঙ্গে সঙ্গেই ফোঁস করে উঠেছেন তিনি। নজিরবিহীন ভাষায় টুইটারে প্রাক্তন আমলাকে আক্রমণ তো করেইছেন, তাঁকে ছোট করার জন্য বর্তমান বিদেশসচিব মাইক পম্পেওয়ের ঢালাও প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। তিনি টুইট করেন, “পম্পেও দারুণ কাজ করছেন। ওঁর জন্য আমি গর্বিত। অথচ ওঁর পূর্বসূরি রেক্স টিলারসনের প্রয়োজনীয় মানসিক কাঠিন্য ছিল না। তিনি যেন জড়বুদ্ধিসম্পন্ন, পাথরের মতো নিরেট। খুব তাড়াতাড়ি ওঁকে ঝেড়ে ফেলতে পারিনি। তার উপর ছিলেন চরম অলস। এখন ছবিটাই পাল্টে গিয়েছে।”
দু’জনের মধ্যে ঝামেলা নতুন নয়। কিন্তু সেটা বহুদিন ধরে ধামাচাপা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সিবিএস নিউজে একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প সম্পর্কে টিলারসন কিছু অপ্রীতিকর মন্তব্য করায় যেন আগুনে ঘি পড়ে। কী বলেছেন টিলারসন? তাঁর দাবি, “প্রেসিডেন্ট সম্ভবত আমাকে নিয়ে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলতেন, এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। আমি বলছি তাই করতে হবে। আমার জবাব হত, মিঃ প্রেসিডেন্ট, আমি বুঝতে পারছি আপনি কী চাইছেন। কিন্তু এটা করা সম্ভব নয়, কারণ এটা বেআইনি। তিনি সহজাত প্রবৃত্তি থেকে কথাগুলি বলতেন, যা এককথায় আবেগপ্রবণ বলা যেতে পারে। কিন্তু আমার পক্ষে এভাবে কাজ করা সম্ভব ছিল না। কারণ, এক্সওনমবিল কর্পোরেশনে অনেক শৃঙ্খলা, রীতি মেনে কাজ করতে অভ্যস্ত ছিলাম। আর যাঁর সঙ্গে কাজ করছি তিনি যথেষ্ট শৃঙ্খলাহীন, পড়তে পছন্দ করেন না, এমনকী সংক্ষিপ্ত রিপোর্টও পড়েন না, কোনও বিষয়ের গভীরে গিয়ে ভাবার অভ্যাস নেই। তাঁর মত ছিল, আমি এটা বিশ্বাস করি। এবার তোমার পালা, বিরুদ্ধ যুক্তি দিয়ে আমাকে বোঝাও। অনেক সময়েই সেটা করার মতো ধৈর্য বা প্রবৃত্তি থাকত না।”
[লাইভ শোয়ে সঞ্চালকের দিকে ছিটকে এল আগুনের গোলা, তারপর…]
ট্রাম্প প্রশাসনে প্রথম বিদেশসচিব ছিলেন টিলারসন। কিন্তু যেদিন তাঁর নাম ঘোষণা হয়, তার আগে পর্যন্ত ট্রাম্প-টিলারসনের কখনও মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি। টিলারসনের ভাষায়, “এই সংঘাত অনিবার্যই ছিল। দু’জনের কাজের ধরন, নীতিবোধ সম্পূর্ণ আলাদা। তাই অনেক ক্ষেত্রেই আমি বাধা দেওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়তেন।” বিদেশসচিব হিসাবে টিলারসন একবার ভারত সফর করেছেন। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন আরও একশো বছরের জন্য। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম ‘২+২’ বৈঠকের কয়েকদিন আগেই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.