সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকা গায়ের জোরে জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করায় আমেরিকা ও ইজরায়েলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়ার হুমকি দিল ইসলামিক স্টেট এবং আল কায়দা। আলাদা আলাদাভাবে অডিও ও ভিডিও বার্তায় ইসলামিক স্টেট ও আল কায়দার হুমকি, এর শেষ দেখে ছাড়বে তারা। দুনিয়ার যে কোনও জায়গায় মার্কিন নাগরিক ও ইহুদিদের উপর হামলা চালাবে তারা। বেছে বেছে হত্যা করা হবে মার্কিনী ও ইহুদিদের। দরকারে আমেরিকা, ইউরোপের মাটিতে, ইজরায়েলের মধ্যে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেবে তারা। জঙ্গিদের হুঁশিয়ারি, যারা জেরুজালেমকে ইজরায়েলের হাতে তুলে দিতে চাইছে তারা মুসলিম দুনিয়ার দুশমন। দুশমনদের খতম করাই হবে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হয়েছে ওই হুমকি বার্তাগুলি।
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন এই হুমকি বার্তাকে মোটেও আমল দিচ্ছে না। আমল দিচ্ছে না ইজরায়েলও। তবে ইহুদিদের খুশি করতে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুটছে প্যালেস্টাইনের থেকে পাকিস্তান। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছে। প্রতিটি মুসলিম দেশে ট্রাম্পের কুশপুতুল পুডি়য়ে বিশাল মিছিল করা হয়েছে। মিছিলগুলি থেকে আমেরিকা ও ইজরায়েল-বিরোধী স্লোগান উঠেছে। বৃহস্পতিবার নানা দেশে পোড়ানো হয় আমেরিকা ও ইজরায়েলের পতাকাও। গাজায় প্যালেস্টাইনের কয়েকশো বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে মার্কিন ও ইজরায়েলি পতাকা পোড়ায়। তাঁদের দাবি, জেরুজালেম ইজরায়েলের নয়, প্যালেস্টাইনের রাজধানী। মার্কিন ঘনিষ্ঠ ইউরোপীয় দেশগুলিও ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিচক্ষণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে ইজরায়েল এই ঘোষণাকে দুহাত তুলে স্বাগত জানিয়েছে। ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক, পুরোপুরি সঠিক ও সাহসী। যদিও রাশিয়া মার্কিন সিদ্ধান্তকে উদ্বেগজনক ও অবাস্তব বলে বর্ণনা করেছে।
ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে পশ্চিম এশিয়ায় ইজরায়েল বিরোধী আন্দোলন ও হিংসা বাড়ার প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের দাবি, এতদিন ধরে আমেরিকা যে পশ্চিম এশিয়া নীতি মেনে চলে এসেছে তা মধ্য প্রাচ্য ও আরব দুনিয়ায় শান্তি আনতে পুরো ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমেরিকার স্বার্থেই জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন তিনি। অর্থাৎ জেরুজালেম নিয়ে প্যালেস্টাইনের যে দাবি রয়েছে তা এবার পুরোপুরি অস্বীকার করল আমেরিকা। তবে এর ফলে জেরুজালেমের রাজনৈতিক ও ভৌগলিক সীমানার কোনও পরিবর্তন হবে না বলে আমেরিকা জানিয়েছে। ফলে আগামী এক বছরের মধ্যে তেল আভিভ থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরানোর প্রক্রিয়া শেষ হবে। জেরুজালেমকে স্বীকৃতি দেওয়ার ফলে আমেরিকা এতদিন ধরে চলে আসা তার আন্তর্জাতিক নীতি লঙ্ঘন করে মধ্য প্রাচ্যের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা বিদেশ নীতি গ্রহণ করল। ভারত সাফ জানিয়েছে, জেরুজালেম নিয়ে দিল্লি তাদের পুরনো নীতি থেকে সরার কথা এখনই ভাবছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.