সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন মুলুকে চলতে থাকা নজিরবিহীন শাটডাউন তুলতে নয়া সমাধান সূত্র দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সঙ্গে সঙ্গে সেই সমাধান সূত্র খারিজ করে দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা।
হোয়াইট হাউস থেকে এক টিভি বার্তায় ট্রাম্প বলেছিলেন, শাটডাউন তুলতে এবং স্বাভাবিক সরকারি কাজকর্ম শুরু করতে তিনি বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের কাছে একটি সমাধান সূত্র রাখতে চাইছেন। তা হল, অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তৈরির খরচ হিসাবে ৫৭০ কোটি ডলার মঞ্জুর করুক ডেমোক্র্যাটরা। তার বদলে তাঁর সরকার আমেরিকায় থাকা প্রায় সাত লক্ষ অবৈধ অভিবাসীকে, বিশেষ করে নথিপত্র ছাড়াই যে সব যুবক, শিশু আমেরিকায় রয়েছে তাদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা এবং আমেরিকায় থাকার সাময়িক অনুমতি দেবে। ট্রাম্প বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে পৃথিবীর ৩০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা লক্ষ লক্ষ শিশু ও যুবক যুবতী আছেন, সরকারের কাজে এঁরা ড্রিমার্স বা ‘স্বপ্ন দেখিয়ে’ নামে পরিচিত। কারণ উন্নত জীবনযাত্রা ও ভাল রোজগারের আশায় এঁরা বিমানবন্দর, জাহাজ বন্দর, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে নানা সময়ে লুকিয়ে চুরিয়ে গা ঢাকা দিয়ে আমেরিকায় ঢুকে পড়েছেন। এঁরা এখন আমেরিকা ছেড়ে যেতে নারাজ। কারণ এঁদের কোনও দেশ নেই। এই সব মানুষ যাঁরা আমেরিকায় থাকলে আমেরিকার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসাবে চিহ্নিত হবেন তাঁদের সামাজিক সুরক্ষা দিতে ও সাময়িকভাবে বেশ কয়েক বছর আমেরিকায় থাকতে দিতে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এই সুরক্ষা তাঁদেরই দেওয়া হবে যাঁরা হিংসা, যুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে নিজের দেশ ছেড়ে আমেরিকায় আসতে বাধ্য হয়েছেন।
ট্রাম্প বলেছেন, এখনই মানবিক সাহায্য ও ত্রাণ হিসাবে ৮০ কোটি ডলার মঞ্জুর করতে হবে। আমেরিকার স্থলবন্দর ও জাহাজ বন্দরগুলিতে মাদক পাচার প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা উন্নত করতে ৮৫ কোটি ডলার সাহায্য করতে এখনই অনুমোদন দিতে হবে ডেমোক্র্যাটদের। এ ব্যাপারে কোনও টালবাহানা চলবে না। ট্রাম্পের এই শর্ত অবশ্য পত্রপাঠ খারিজ করে ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন, ট্রাম্পের এই শর্ত কোনও কাজেই আসবে না। অবাস্তব প্রস্তাব। তার চেয়ে ট্রাম্প এখনই নিঃশর্তে সরকারের কাজকর্ম শুরু করুন। সরকারি কাজকর্ম শুরু হলেই অভিবাসীদের ভাগ্য নিয়ে আলোচনা করা হবে। এছাড়াও রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট, দু’তরফের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে এমন আপস-রফার প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি শিশু ও কম বয়সি অবৈধ অভিবাসীদের যে ছাড় দিতে চাইছেন তার ফলে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে প্রয়োজনীয় আস্থা ও ভরসা ফিরতে পারে। অভিবাসন আইনের আমূল সংস্কার করতে হলে এই ভরসা ফেরানোটা জরুরি।
উল্লেখ্য, মেক্সিকো সীমান্তে বিপুল অর্থ ব্যয় করে ৩২ ফুট উঁচু পাঁচল দেওয়ার জন্য ন্যানসি পেলোসির নেতৃত্বাধীন ডেমোক্র্যাট ও ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন রিপাবলিকানদের মধ্যে নীতিগত বিবাদ তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তার জেরে আমেরিকায় সরকারি কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনার পোশাকি নাম শাটডাউন। এই অচলাবস্থা এক মাস হয়ে গড়িয়েছে। কিন্তু আপসের কোনও চিহ্ন মাত্র নেই। এর জেরে আট লক্ষ সরকারি কর্মচারী এখন কর্মহীন। তাঁদের বেতন ও ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি অচলাবস্থা তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।
[শনিতে ক’ঘণ্টায় দিন? উত্তর দিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.