Advertisement
Advertisement

জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা ট্রাম্পের, পালটা হুঁশিয়ারি সৌদির

ট্রাম্প মনে করেন, জেরুজালেম ঐতিহাসিকভাবে ইহুদিদেরই।

Trump flouts warnings, declares Jerusalem Israel's capital
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 7, 2017 3:34 am
  • Updated:September 20, 2019 5:52 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিংসা ও অশান্তির আগুনে পুড়তে থাকা পশ্চিম এশিয়ায় নয়া বিপদ হয়ে দেখা দিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত। জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দিলেন তিনি। এজন্য বর্তমান রাজধানী তেল আভিভ থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরানোর কাজ শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে মার্কিন বন্ধু সৌদি আরবের রাজার চরম হুঁশিয়ারি, এই বিপজ্জনক পদক্ষেপের জন্য ফল ভুগতে হবে আমেরিকাকে। যদিও খ্রিস্টান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস দাবি করেছেন, হিংসা ও সংঘর্ষ এড়াতে জেরুজালেমে স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক।

[মঙ্গল কি ছিল যুদ্ধক্ষেত্র? ‘কামানের গোলা’র সন্ধান পেয়ে তাজ্জব বিজ্ঞানীরা]

ট্রাম্প প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ অফিসার জানিয়েছেন, জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নিয়ে যাওয়া নিয়ে খুব শীঘ্রই বিবৃতি দিতে চলেছেন ট্রাম্প। শহরটিকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসাবেও স্বীকৃতি দিয়ে বিবৃতি দিলেন তিনি। এটি তাঁর ও রিপাবলিকানদের দীর্ঘদিনের ঘোষিত নীতি ছিল। কারণ ট্রাম্প মনে করেন, জেরুজালেম ঐতিহাসিকভাবে ইহুদিদেরই। এই শহরে শুধুমাত্র ইহুদিদেরই অধিকার আছে। কয়েকজন মার্কিন বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা, ট্রাম্পের জেরুজালেম নীতিতে বড় আকারের সংঘর্ষের সূত্রপাত হতে পারে পশ্চিম এশিয়ায়। মার্কিন বন্ধু সৌদি আরবের রাজপরিবার ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে বিশ্বের সব মুসলমানের প্রতি বিরাট অপমান বলে বর্ণনা করেছে। সৌদির সরকার পরিচালিত আল আখবরিয়া টিভি জানিয়েছে, নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে সৌদির রাজা সলমনকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প।

Advertisement

দোভাষীর মাধ্যমে কথা হয় রাজা সলমন ও ট্রাম্পের মধ্যে। দৃশ্যত প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ রাজা সলমন ট্রাম্পকে জানান, তাঁরা ভীষণই অসন্তুষ্ট। আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত সৌদি এবং গোটা আরব দুনিয়া কিছুতেই মেনে নেবে না। দুনিয়ার সব মুসলমানের ভাবাবেগে এটি একটি বড় আঘাত। জেরুজালেম কখনওই মুসলমানদের শত্রু ইহুদিদের রাজধানী হতে পারে না। ট্রাম্পের এই বিপজ্জনক ও উসকানিমূলক সিদ্ধান্তের জেরে আগুন জ্বলতে পারে মুসলিম দুনিয়ায়। জবাবে ট্রাম্প তাঁর বাধ্যবাধকতার কথা জানান। কিন্তু তাতে সৌদি রাজের মন গলেনি।

[নিশানায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে, হত্যার ছক বানচাল লন্ডন পুলিশের]

একইভাবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, ইরাকের প্রেসিডেন্ট, জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লা এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেলস ফতেহ আল সিসি। এঁরাও আমেরিকার ঘোষিত বন্ধু। কিন্তু ইজরায়েল বিরোধিতার প্রশ্নে তাঁরা এককাট্টা। হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক জানান, মুসলিম দুনিয়ার নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেও জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত এবং আমেরিকার ইজরায়েল-নীতি বদলাবে না। উল্লেখ্য, এতদিন শিয়া মুসলিম রাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকাকে ব্যবহার করে এসেছে সৌদি রাজপরিবার। আরব দুনিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায় প্রাধান্য বজায় রাখতে ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে সুন্নি মুসলিম দেশ সৌদি আরবের রক্ষাকবচ থেকেছে আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের প্রথম বিদেশ সফর ছিল সৌদিতেই। কিন্তু জেরুজালেম ইসু্যতে এখন সৌদির হুঙ্কারে আমেরিকার সঙ্গে মনোমালিন্য প্রকাশ্যে।

[ভারতের লগ্নিতে ইরানে চালু চাবাহার বন্দর, ঘুম ছুটেছে চিন-পাকিস্তানের]

এই অবস্থায় খ্রিস্টান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের পরামর্শ, স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক জেরুজালেমে। বুধবার তাঁর সাপ্তাহিক রুটিন ভাষণে পোপ ভ্যাটিকান সিটিতে জনতার উদ্দেশ্য জানান, জেরুজালেম নিয়ে চলতি পরিস্থিতিতে আমি চুপ থাকতে পারি না। আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাব মেনে জেরুজালেম শহরের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সব পক্ষকে অনুরোধ করছি। মঙ্গলবার প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফোন করে পোপকে এই সংকটে মধ্যস্থতা করতে অনুরোধ জানান।

তার একদিন পরেই পোপ বিবৃতি দিলেন। পোপ বলেন, ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিমদের সহাবস্থানে বিশ্বের এক অপূর্ব শহর জেরুজালেম। একেশ্বরবাদকে আলাদা মাধুর্য দিয়েছে তিন ভিন্ন ধর্মের মিলনস্থল এই শহর। সেখানে শান্তি ও সহাবস্থান বজায় রাখতেই হবে। তাই পশ্চিম এশিয়ায় সংঘর্ষ, অশান্তি ও উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে সেজন্য এই শহরে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হবে।

[তাইওয়ানের আকাশে ৯ ঘণ্টা রং ছড়াল রামধনু,উচ্ছ্বসিত বাসিন্দারা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement