সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তখনও করোনা ভাইরাসকে (Coronavirus) চেনেনি গোটা বিশ্ব। তার আগেই চিনের (China) ইউহানের ল্যাবরেটরির কয়েকজন গবেষকের শরীর খারাপ, নানা উপসর্গ। এসব নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চলে গিয়েছিলেন ৩ জন। তারও একমাস পর বিশ্বে কামড় বসিয়েছিল কোভিড-১৯ (COVID-19)। অর্থাৎ সবার আগে ইউহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি বা ইউহানের সেই বিতর্কিত গবেষণাগারেই প্রথম টের পাওয়া গিয়েছিল মহামারীর প্রাদুর্ভাব। সম্প্রতি চিনের ইউহান নিয়ে এই নয়া তথ্য প্রকাশ করল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। যা নিয়ে ফের শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, করোনার উৎস খুঁজতে ইউহানে আরও বড় পরিসরে তদন্ত প্রয়োজন।
মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯এর নভেম্বর নাগাদ ইউহান (Wuhan) ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির (WIV) তিন গবেষককে দেখা গিয়েছিল ঘনঘন হাসপাতালে যেতে। সেসময় তাঁদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছিল। চাইছিলেন, হাসপাতালে ভরতি হয়ে চিকিৎসা করাতে। করোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে যে তদন্ত চলছে চিনের ইউহান প্রদেশে ঘিরে, সেই সংক্রান্ত জরুরি বৈঠকের ঠিক আগেই এমন অজানা তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে আমেরিকা। আর তাতে আরও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি বাইডেন প্রশাসন। তবে আমেরিকার তরফে বলা হচ্ছে, কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার আগের দিনগুলো নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। তাহলে কি চিনবাসীর মধ্যেই লুকিয়ে এর উৎস? প্রশ্ন তুলেছে ইউরোপীয় দেশগুলিও। তারা সকলে একত্রে WHO-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে করোনার উৎস সন্ধানের তদন্তে কাজ করছে।
নিজেদের গোপন তথ্য আচমকা প্রকাশ্যে আসায় যথারীতি তীব্র প্রতিক্রিয়া চিনের। চিনা বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে WHO-র তদন্তকারী দল ইউহানের ওই ল্যাবরেটরি পরিদর্শনের পরও এ ধরনের রিপোর্ট পেশ একেবারেই কাম্য নয়। মন্ত্রকের অভিযোগ, আমেরিকা ল্যাবের গোপন তথ্য হাতাতে চাইছে। চিনের পালটা প্রশ্ন, সত্যিই ভাইরাসের উৎস সন্ধানের কাজেই কি আগ্রহী আমেরিকা নাকি বিশ্ববাসীর নজর অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা চলছে?
এর আগে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময়েও চিনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠেছিল – তাদের গবেষণাগারই করোনা ভাইরাসের কেন্দ্রস্থল। চিন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। এই অস্বীকার যতই জোরদার হয়েছে, ততই বিশ্ববাসীর সংশয়ও বেড়েছে। তাই WHO-র নেতৃত্বে তদন্তকারী কমিটি গড়ে এর নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। প্রথমে সেই দলকে চিনের তরফে ইউহানেই প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে একাধিকবার অভিযোগ ওঠে। পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চিন ইউহানের ভাইরোলজি ল্যাব পরিদর্শনে ছাড়পত্র দিলেও এই সংক্রান্ত গবেষণার প্রাথমিক তথ্য হাতে দিতে নারাজ ছিল। এরপরই মার্কিন গোয়েন্দা দপ্তরের এই রিপোর্ট মহামারী সংক্রমণে চিনের ভূমিকা এবং তাদের প্রতি সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলল, তা বলাই যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.