সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্য শুধু নির্দিষ্ট কিছু হরমোনে। বিশ্বাস করতেন বাবা। আত্মবিশ্বাসী ছিল মেয়েও। ফলে উচ্চশিক্ষা আটকায়নি ইন্দিরা ইগালাপতির। যদিও আত্মীয়দের পরামর্শ ছিল, শেষ পর্যন্ত বিয়েই তো দিতে হবে। অতএব, ফালতু খরচ না করে পণের জন্য টাকা জমানোই বুদ্ধিমানের কাজ। ওই আত্মীয়, প্রতিবেশীদের ভুল প্রমাণ করেছেন ইন্দিরা। তিনি এখন দেশের গর্ব। পেশায় সৌদি আরবের (Saudi Arabia) মেট্রো রেলের চালক।
ইন্দিরারা আদতে অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhra Pradesh) গুন্টুরের বাসিন্দা। পরে থিতু হন হায়দরাবাদে। তিনিই বর্তমানে রিয়াধ মেট্রো রেলের অন্যতম ট্রেনচালক। ইন্দিরা ও তাঁর সহকর্মীদের হাত ধরেই বদলাচ্ছে সৌদি দেশটা। যেখানে একসময়ে মহিলাদের কোনওরকম গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হত না, সেখানে ‘ভিশন ২০৩০’-এ জোর দেওয়া হয়েছে নারীর ক্ষমতায়নে। বলা বাহুল্য, ইরানের হিজাব আন্দোলনের পাশে মধ্যপ্রাচ্যেরই এক দেশে ইন্দিরার এই কাণ্ড নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় নয়া মাইলস্টোন। যা দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল।
ছোটবেলায় মেকানিক বাবাকে যন্ত্রপাতি এগিয়ে দিয়ে সাহায্য করতেন ইন্দিরা। পরে মেধার পরিচয় দিয়ে আইটি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর। এরপরেও সহজ রাস্তা খোলা ছিল। অধিকাংশ বান্ধবীর মতো সফটওয়্যার পেশাদারের পথ বেছে নিতে পারতেন। কিন্তু সকলকে অবাক করে লোকো পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। যেটি পুরুষের ক্ষেত্র বলেই পরিচিত। যদিও সেই ধারণা ভেঙে তছনছ করে সৌদি যাত্রার আগেই তিন বছর হায়দরাবাদে মেট্রো রেল চালান। এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজার কিলোমিটার ট্রেন চালিয়েছেন। কাতার বিশ্বকাপের সময় দোহায় গিয়েও মেট্রো চালিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইন্দিরার স্বামীও একজন লোকোমোটিভ পাইলট। তিনি দোহায় মেট্রো চালান স্থায়ী ভাবে।
নীরবে এত কাণ্ড করা ইন্দিরা বলেন, “যখন রিয়াধ মেট্রোর জন্য নির্বাচিত হয়েছিলাম, তখন বেশিরভাগ আত্মীয় শঙ্কিত হন। কীভাবে একজন অবিবাহিত তরুণী সৌদি আরবে ট্রেনের পাইলট হিসাবে কাজ করবে। কিন্তু আমার সংকল্পের সামনে কোনও বাধাই টেকেনি। সৌদিতে চলে যাই আমি। আজ পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ট্রেন চালক হিসেবে গর্বিত আমি”।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.