সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’বেলা দু’মুঠো খাবার – এটাই এখন মহার্ঘ হয়ে উঠেছে। আফ্রিকার দরিদ্র দেশ থেকে শুরু করে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে তো বটেই, তথাকথিত বড়লোকের দেশেও যদি দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটাতে নাগরিকদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে, তবেও আশ্চর্যের কিছু থাকবে না। কারণ, করোনা কালে এমন বহু সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে বিশ্বকে। যার মধ্যে অন্যতম, খাদ্য সংকট। রাষ্ট্রসংঘ সতর্ক করে বলছে, করোনা আবহে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর খাদ্য সংকট তৈরি হবে বিশ্বজুড়ে। রাষ্ট্র যদি এখনই হাল না ধরে, তাহলে শিরে সংক্রান্তি দশা অবশ্যম্ভাবী।
করোনা পরিস্থিতির জেরে বিশ্বে মোট জনসংখ্যার অন্তত ১০ শতাংশ খুব শিগগিরই নিজেদের খাদ্য সুরক্ষা হারিয়ে ফেলবেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যাটা বাড়বে। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ”এখনই শক্ত হাতে রাশ না ধরলে খাদ্য ব্যবস্থায় জরুরি অবস্থা শুরু হবে এবং শিশু থেকে বড় – সকলের উপর তা দীর্ঘস্থায়ী ছাপ রেখে যাবে।”
তাহলে কি করোনা সংক্রমণ এড়াতে লকডাউনের জন্য কৃষিকাজ বন্ধ থাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে? তাই কি রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের এমন আবেদন? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে ব্যাপারটা তেমন নয়। বরং এখানে আরও চমকপ্রদ উত্তর মিলছে। আন্তোনিও গুতেরেজ বলছেন, ”প্রায় ৮০০ কোটি মানুষের খাওয়ার জন্য যথেষ্ট খাদ্যপণ্য মজুত আছে। কিন্তু খাদ্যবন্টন ব্যবস্থা এমনভাবে ভেঙে পড়েছে যে সকলের ঘরে খাবার পৌঁছচ্ছে না। এর নেপথ্যে করোনা পরিস্থিতি। তাতেই পরিস্থিতির ভয়াবহতা বাড়ছে।”
তবে লকডাউন নিশ্চিতভাবেই যে খাদ্যবণ্টন ব্যবস্থায় বড়সড় থাবা বসিয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। পরিবহণ বন্ধ থাকায় মাঠের ফসল মাঠেই পড়ে থেকেছে। জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছতে পারেনি। আর এসবের হাত ধরেই এসেছে মূল্যবৃদ্ধির অভিশাপ। যে খাবার সহজে কিনতে পারত একটি দরিদ্র পরিবার, সেটাই এখন কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে দিন শেষে পেটে খিদে নিয়েই ঘুমোতে যেতে হচ্ছে অনেককে। বিশ্বের ৪৯ মিলিয়ন মানুষই এই স্তরে পড়ছেন। ২০ শতাংশ শিশুকে থাকতে হবে অভুক্ত অবস্থায়। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের মত, অন্যান্য মহামারী পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারও খাদ্যসংকট এবং অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে লড়াইয়ে এগিয়ে আসতে হবে রাষ্ট্রকেই। তবে এবারের সমস্যাটা অন্যবারের চেয়ে যে কিছুটা কঠিন, তাও মানছেন রাষ্ট্রসচিব। তাই চিন্তা এবার বেশি। করোনার হাত ধরে আসছে বড়সড় খাদ্য সংকট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.