সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্যালিফোর্নিয়ার সিসিল হোটেল। নিঝুম রাতে ফাঁকা করিডরে তখন আর কোনও শব্দ নেই। শুধু বছর তেইশের এলিজা ল্যামের পায়ের শব্দই পাওয়া যাচ্ছিল।
এলিজা কিন্তু স্বস্তিতে ছিলেন না। গভীর রাত, জনশূন্য হোটেল ফ্লোর- তার জন্যই কি?
বলা মুশকিল। ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারির ওই রাতের পর তাঁকে আর খুঁজে পাওয়াই যায়নি।
একটা সিসিটিভি ফুটেজ যদিও পাওয়া গিয়েছিল এলিজার উধাও হয়ে যাওয়ার পরে। যাঁরা দেখেছেন সেই ফুটেজ, স্বস্তিতে বেশ কয়েক রাত ঘুমোতে পারেননি।
করিডর পেরিয়ে একটু দ্রুত পায়েই এলিজা পৌঁছে যান লিফটের দরজার কাছে। যদিও তাঁর তাড়াহুড়োর কোনও প্রয়োজন ছিল না। এলিজা কি তাহলে করিডরে অনুভব করতে পেরেছিলেন কারও অশরীরী অস্তিত্ব?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য এলিজা আজ আর আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু, ওই সিসিটিভি ফুটেজ স্তব্ধ করে রাখছে নিদারুণ আতঙ্কে।
করিডরের শেষ প্রান্তে এসে এলিজা লিফটের বোতাম টেপেন। দরজা খুলে যায় নিয়ম মতো। কিন্তু, তার পর আর দরজা বন্ধ হয় না। এলিজা বার বার বোতাম টিপেই চলেন। কিন্তু, কোথায় কী! কোনও চেষ্টাতেই লিফট চলে না। ঠিক যেন কেউ বাইরে থেকে ধরে রেখেছে দরজাটা!
বিভ্রান্ত হয়ে এলিজা বেরিয়ে আসেন লিফটের বাইরে। ডান পাশে, বাঁ পাশে উঁকি দিয়ে দেখতে থাকেন কেউ আছেন কি না ধারে-কাছে। আবার ফিরে আসেন লিফটের ভিতরে। একে একে সবকটা বোতাম টেপেন। কোনওটাতেই কাজ হয় না।
এলিজা ল্যাম
তার পরেই ঘটে সেই অস্বাভাবিক কাণ্ড। ফের লিফটের বাইরে বেরিয়ে আসেন এলিজা। তাঁকে কথা বলতে দেখা যায় অদৃশ্য কারও সঙ্গে। বিভ্রান্ত এলিজা যেন বলার চেষ্টা করছিলেন, কেন অন্য জন লিফটের ভিতরে আসছেন না! বার বার লিফটের দিকে হাত দেখিয়ে সেই অদৃশ্য পক্ষকে কিছু একটা বলেই চলেছিলেন এলিজা। এক সময়ে ক্লান্ত হয়ে তাঁকে ফিরে আসতে দেখা যায় লিফটের ভিতরে।
লিফট কিন্তু চলে না, দরজাও বন্ধ হয় না আগের মতোই!
বিরক্ত হয়ে এলিজা লিফট ছেড়ে চলে যান। দেখা যায়, এক বার বন্ধ হচ্ছে লিফটের দরজা, ফের খুলে যাচ্ছে। বেশ কয়েক বার এরকম হয়। সিসিটিভি ফুটেজ ধরে রেখেছে শুধু এটুকুই!
এলিজা কিন্তু ফিরে আসেননি। লিফট থেকে বেরিয়ে তিনি কোথায় গিয়েছিলেন, তাও প্রথমটায় জানা যায়নি।
সপ্তাহ দুয়েক পরে নানা অভিযোগ জানাতে শুরু করেন সিসিল হোটেলের বোর্ডাররা। যে ফ্লোরে এলিজাকে শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল, সেই ফ্লর থেকেই অভিযোগ আসতে থাকে। কল থেকে না কি জল পড়ছে না! পড়লেও তার রং কালচে, ঠিক যেন রক্ত মেশানো রয়েছে জলে।
জলের ট্যাঙ্ক পরীক্ষা করতে গিয়ে পাওয়া যায় এলিজার মৃতদেহ! সপ্তাহ দুয়েক আগে মৃত্যু হলেও তেমন পচন কিন্তু ধরেনি!
চিকিৎসকরা ঘটনাটাকে আত্মহত্যা বলেই মানতে চান। কিন্তু, সিসিল হোটেলের ওই ফ্লোরে যাঁরাই যান, তাঁরাই কেন আত্মহত্যা করেন?
এলিজা একা নন, তাঁর আগেও অন্তত তিন জন আত্মহত্যা করেছেন ওই ফ্লোর থেকে ঝাঁপ দিয়ে! কোনও রহস্যেরই কিনারা হয়নি।
কেউ কি বাধ্য করেন তাঁদের? যিনি সেই রাতে এলিজার সঙ্গে ছিলেন লিফটের ভিতরেও?
ভাল করে দেখুন তো ভিডিওটা! আপনি কিছু দেখতে পাচ্ছেন কি?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.