যুদ্ধের মধ্যেই 'ক্যারল অব দ্য বেল'-এ মেতে উঠলেন ইউক্রেন সেনার মিউজিক ব্যান্ড।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাসে। এটাই তো সান্তাক্লজের সাদা দাড়ির মতো বরফের ঋতু। পাইন, সাইপ্রাস, ফার গাছ যেন ক্রিসমাস ট্রি, উপরের অন্ধকার সাজানো নক্ষত্রে। এবং বাতাসে ভাসছে জিঙ্গল বেল। এমন সময়ে বন্দুক হয়ে উঠল বাদ্যযন্ত্র! বারুদের গন্ধ, রক্ত, মৃত্যু ডিঙিয়ে ইউক্রেন সেনার ব্যান্ডের ক্রিসমাস ক্যারলের ভিডিও ভাইরাল সমাজমাধ্যমে। তথাপি যুদ্ধবাজ মানুষ কি আর হাত গুটিয়ে বসে আছে?
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর পরেই হাজার হাজার ইউক্রেনীয় নাগরিক প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছেন পড়শি দেশগুলিতে। এর ফলে দেশটির বহু শহর আজ প্রায় জনশূন্য। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাড়ায় পাড়ায় ভাঙাচোরা ভূতের বাড়ি, বাজার-ঘাট, দোকান, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, সরকারি অফিস, ব্রিজ… ভয়ংকর ধ্বংসের সেই পৃথিবীতে ক্রিসমাসের মতো আনন্দ উৎসব কার্যত বেমানান। সবচেয়ে বড় কথা যিশুর জন্মৎসব বলে চুপ নেই রুশ সেনা। উৎসবের মরসুমেও মুহুর্মুহু বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ছে ইউক্রেনের মাটিতে। এমনকী পূর্ব ইউক্রেনের অন্যতম শহর পোক্রোভস্কেও পুতিনের সেনার হামলা অব্যাহত, যে পোক্রোভস্কের সঙ্গে ক্রিসমাস ক্যারলের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।
On the frontlines, Ukrainian SOF warriors play Shchedryk/Carol of the Bells amidst explosions and skirmishes, proving that art, too, is a weapon, while in Kyiv an orchestra performs it in a metro station. Merry Christmas!
Full video: https://t.co/GJJFp4rTcC pic.twitter.com/a17i0Je1sY
— SPECIAL OPERATIONS FORCES OF UKRAINE (@SOF_UKR) December 24, 2024
এই পোক্রোভস্কেই জন্ম বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ‘ক্যারল অব দ্য বেলসে’র। হয়তো সেই কারণেই মৃত্যু উপত্যকায় দাঁড়িয়েও ‘ক্যারল অব দ্য বেল’-এ মেতে উঠল ইউক্রেন সেনার মিউজিক ব্যান্ড। প্রতীকী কাণ্ডও দেখা গেল—বন্দুক হয়ে উঠল বাদ্যযন্ত্র। মিষ্টি জিঙ্গল বেলের সুরে যখন উৎসবের আনন্দ বইছে মিউজিক ব্যান্ডের সদস্য সেনাকর্মীদের মধ্যে, তখনও কাছে-পিঠে আছড়ে পড়ছে শত্রু বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র। ভালো কথা একটাই—যুদ্ধ ঘনিয়ে উঠতেই পোক্রোভস্কের অধিকাংশ মানুষ শহর ছেড়েছেন। যাঁরা পৈতৃক ভিটেমাটি ছাড়তে পারেনি, তাঁরা প্রাণভয়ে গৃহবন্দি। আপাতত তাঁদের ক্রিসমাস মৃত্যু-ঠান্ডা বরফের নিচে। যে বরফের উপরে লাল রক্তের দাগ। ক্রিসমাস ট্রির মতো মতো পাইন, ফার কিংবা সাইপ্রাস গাছের মাথায় নক্ষত্রে নেই, কেবলই মৃত্যু উপত্যকার অন্ধকার। যুদ্ধের এই দেশে শান্তিই হয়তো সান্তাক্লজের একমাত্র উপহার হতে পারে। প্রশ্ন হল, কবে আসবে সেই শান্তি?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.