সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স মাত্র ১৫ বছর৷ মা হয়ে গিয়েছিল মেয়েটি৷ কিন্তু সমাজ তো মেনে নেবে না৷ তাই সমাজের কাছে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে দুধের শিশুটিকে জ্যান্ত কবর দিয়েছিল ১৫ বছরের মা৷ নাঃ, এহেন নৃশংসতার বর্ণনা দেওয়ার জন্য এই প্রতিবেদন নয়৷ বরং অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার গল্প এটি৷
ঘটনাস্থল থাইল্যান্ডের ব্যান নং খাম গ্রাম৷ মায়ের ফেলে যাওয়া সেই শিশুকে মাটি খুঁড়ে তুলে আনল এক কুকুর৷ মাটি চাপা পড়া একরত্তির হৃদপিণ্ডে তখনও ধুকপুকুনি টের পাওয়া যাচ্ছিল৷ কালো কুচকুচে সারমেয়র হাঁকডাকে তখন জড়ো হয়ে গিয়েছেন আশেপাশের লোকজন৷ তড়িঘড়ি বাচ্চাটিকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ চিকিৎসকরা শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বলেন, বাচ্চা দিব্যি সুস্থ রয়েছে৷ আর এই যাত্রায় মরতে মরতে শুধুই কুকুর-মায়ের জন্য বেঁচে গেল ওই শিশু৷
এমন মহান কাজ করে যে আন্তরিক বোধে মানুষের থেকে অনেক এগিয়ে গেল এই চারপেয়ে, তার সম্পর্কে আসুন, দু-একটা তথ্য জেনে নিই৷ নাম পিংপং৷ তার মালিক উষা নিসাইখা জানাচ্ছেন, একটা দুর্ঘটনার পর পিংপংয়ের একটা পা জখম হয়ে যায়৷ তারপর থেকে তিন পায়েই চলাফেরা করে তাঁর পোষ্য৷ মালিকের কথায়, ‘ওকে আমার কাছে রেখে দিই কারণ, ও খুব প্রভুভক্ত আর বশংবদ৷ আর আমাকে যে কোনও কাজে ও খুব সাহায্য করে৷ ওকে সারা গ্রাম ভালবাসে৷ আমরা ওকে নিয়ে খুব খুশিতে আছি৷’ তো এই হল সংক্ষেপে এই প্রতিবেদনের নায়ক পিংপং৷ কীভাবে সে জ্যান্ত কবরে চলে যাওয়া বাচ্চাটাকে উদ্ধার করল? গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গ্রামের একটা জায়গায় উঁচু হয়ে থাকা মাটি দেখে নিজেই সেদিকে এগিয়ে যায় পিংপং৷ সামনের দুটো পা দিয়ে মাটি খুঁড়তে থাকে৷ তাতেই বেরিয়ে আসে কচি কচি হাত, পা৷ বোঝা যায়, মাটির ভিতর রয়েছে এক সদ্যোজাত৷
যে মা-রূপী মেয়েটি নিজেকে সামাজিক কলঙ্কমুক্ত করতে সদ্যোজাতকে কবর দিয়ে রেখেছিল, শাস্তি পেয়েছে সেও৷ মেয়েটি তার কৃতকর্মের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেছে৷ পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তা বলে ঠিক হয়েছে, কুমারী মেয়ের অভিভাবকরা শিশুটির দায়িত্ব নেবেন৷ পিংপং না থাকলে হয়ত এই প্রতিবেদনের এমন এক মধুর সমাপ্তি হত না৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.