সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের একবার উত্তপ্ত দক্ষিণ চিন সাগর। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বসার পর থেকেই চিন এবং আমেরিকা দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা। ট্রাম্প জমানায় দুই শক্তিধর দেশের সম্পর্ক কেমন হবে সেই নিয়েই সরগরম বিশ্ব রাজনীতি। এরমধ্যেই শনিবার দক্ষিণ চিন সাগরে নিমিৎজ শ্রেনির মার্কিন এয়ারক্রাফ্ট কেরিয়ার ইউএসএস কার্ল ভিনসনের মহড়া নিয়ে আরও উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। শুধু কার্ল ভিনসন নয়, আরও বেশ কয়েকটি মার্কিন রণতরী এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। আর এতেই বেজায় চটেছে বেজিং।
দক্ষিণ চিন সাগরে যাতে চিনের সার্বভৌমত্ব নষ্ট না হয়, সেজন্য গত বুধবারই চিনের বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনকে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। তবে আমেরিকা যে তাতে কর্ণপাত করেনি এবং এই অঞ্চলে বেজিংকে আধিপত্য কায়েম করতে দেবে না এই মহড়া থেকেই সেটা স্পষ্ট। উল্লেখ্য, শুক্রবারই দক্ষিণ চিন সাগরে নিজের মহড়া শেষ করেছিল ভারতের প্রতিবেশী দেশটি। তার পাল্টা দিতেই আমেরিকার এই মহড়া বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যদিও আমেরিকার তরফ থেকে এটা মানতে চাওয়া হয়নি। রিয়ার অ্যাডমিরাল জেমস কিলবি জানান, ”যেকোনও পরিস্থিতির জন্য নিজেদের তৈরি রাখার জন্যই এই মহড়া। এছাড়া এর পিছনে অন্য কোনও কারণ নেই। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিজেদের মিত্রশক্তিদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক এবং বোঝাপড়া তৈরি করতেই এই মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ ও তাইওয়ানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের নতুন করে হৃদ্যতা তৈরি হওয়ায় আমেরিকার উপর বেজায় চটেছিল বেজিং৷ ভারতের সঙ্গে জাপানের যৌথ সামরিক অভিযানও মেনে নিতে পারেনি চিন৷ রুশ সীমান্তেও একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে রেখেছে বেজিং৷ রুশ মিডিয়ার দাবি, ওই ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানায় রয়েছে ওয়াশিংটন৷ দ্রুতই ট্রাম্পের সঙ্গে চিন সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা৷ সেক্ষেত্রে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অভূতপূর্ব সামরিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা৷ এরকম পরিস্থিতি তৈরি হলে ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে এই যুদ্ধ অতীতের দুটি বিশ্বযুদ্ধকেও বহু গুণে ছাপিয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি অনেকদিন ধরেই। চিনের দাবি পুরো এলাকাটি তাঁদের নিজস্ব। আর এতেই আপত্তি ব্রুনেই, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের। তাঁরা জানিয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে তাঁদেরও অধিকার রয়েছে। এদিকে, পুরো এলাকাটিতে নিজেদের শক্তি বাড়াতে কৃত্রিম দ্বীপও তৈরি করেছে বেজিং। শুধু আশেপাশের দেশগুলো নয়, আমেরিকাও চিনের এই পদক্ষেপে আপত্তি জানিয়েছিল। কিন্তু সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই দক্ষিণ চিন সাগরে প্রতিনিয়ত নিজের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে বেজিং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.