সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা-মুম্বইয়ে তাপমাত্রার পারদ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলেই ত্রাহি ত্রাহি রব ছাড়েন বাসিন্দারা। কিন্তু একবার ভাবুন তো, তাপমাত্রা মাইনাস ৭১ ডিগ্রি হলে আপনি কী করবেন? এমনই এক গ্রামের খোঁজ দেব আপনাকে। এই গ্রামের তাপমাত্রা শীতকালে নেমে যায় মাইনাস ৭১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এমনই ঠান্ডার কামড়, যে মোবাইল ফোন কাজ করে না, পেনের কালি জমে যায়।
কোন রুপকথার গল্প নয়, একেবারে খাঁটি খবর। বিশ্বাস না হলে, নিজেই একবার রাশিয়ার ওইমম্যাকন গ্রামে একবার ঘুরে আসুন। জানুয়ারি মাসে এই গ্রামের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৫০ ডিগ্রি নিচে। এই গ্রামকে ‘বিশ্বের শীতলতম গ্রাম’ বলে দাবি করেছে ‘মেল অনলাইন’। শীতকালে এই গ্রামের তাপমাত্রা নেমে যায় মাইনাস ৭১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মেরেকেটে ৫০০ পরিবারের বাস এই গ্রামে। ‘ওইমম্যাকন’ শব্দের অর্থ, যে জল কখনও জমাট বাধে না। স্থানীয় একটি উষ্ণ প্রস্রবণের জন্য গ্রামটির এই নাম। প্রত্যন্ত প্রান্তে অবস্থিত হওয়ায় রুশ সরকারও এই গ্রামের উন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর দেয় না।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অত্যাধিক ঠান্ডার জন্য এই গ্রামবাসীদের দৈনিক জীবনযাত্রা সম্পর্কে সমতলের মানুষদের কোনও ধারণা নেই। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রাম সম্পূর্ণ তুষারাবৃত হওয়ায় এই গ্রামে কোনও কৃষিকাজ হয় না। ঘোড়া-সহ অন্যান্য পশুর মাংস বাসিন্দাদের দৈনিক খাবার। তবে কোনও গ্রামবাসীই অভুক্ত থাকেন না বা অপুষ্টিতে আক্রান্ত নন। ডাক্তাররা বলছেন, পশুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন থাকায় অপুষ্টিতে ভোগার প্রশ্নই নেই বাসিন্দাদের।
জানলে অবাক হবেন, এই গ্রামের বাসিন্দাদের মোবাইল থাকলেও সেই মোবাইল অধিকাংশ সময়ই ব্যবহার করা যায় না। এই গ্রামে কারও বাড়ির ভিতরে শৌচাগার নেই, পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে বাড়ির বাইরে শৌচকর্ম করতে যান। বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকলে চার-পাঁচ ঘন্টার মধ্যে জলের পাইপ জমে ফেটে যায়। দৈনিক অন্যান্য সমস্যার মধ্যে রয়েছে পেনের কালি জমে যাওয়া, রাস্তায় বেরোলে বরফের কুচি ধারালো ছুরির মতো চোখে-মুখে ঢুকে যাওয়া। এমনকী, গাড়ির ইঞ্জিনও দিনভর চালু রাখতে হয়। কারণ, একবার বন্ধ হয়ে গেলে গাড়ির ইঞ্জিন ফের চালু করা কষ্টসাধ্য। রাশিয়ার বিভিন্ন ট্র্যাভেল কোম্পানি এই গ্রামে পর্যটকদের নিয়ে আসেন এটা দেখাতে যে প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও মানুষ এখানে কীভাবে সুখে-শান্তিতে বাস করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.