সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধে তৈরি হয়েছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা। এহেন পরিস্থিতিতে ফের তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বলয়ে অনুপ্রবেশ চিনা যুদ্ধবিমানের। সোমবার দ্বীপরাষ্ট্রটির বায়ুসীমায় ঢুকে পড়ে লালফৌজের ৩০টি যুদ্ধবিমান।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাইওয়ানের (Taiwan) আকাশ সুরক্ষা বলয়ে এমনই ৩৯টি যুদ্ধবিমান নিয়ে হানা দিয়েছিল চিনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’। আড়েবহরে তার পরেই রয়েছে গতকালের বিমানবাহিনী। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, চিনা গতিবিধির উপরে নজর রাখতে ইতিমধ্যে তাঁদের বায়ুসেনা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে, সোমবার তাদের ‘এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন’-এ ঢুকে পড়ে চিনের ৩০টি বিমান। এরমধ্যে ২০টি ফাইটার জেট ছিল। চিনা বিমানের গতিবিধি নজরে আসতেই মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম সক্রিয় করে দেওয়া হয় এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়। এর আগে বহুবার তাইওয়ানের কাছে চিনের কেএ-২৮ সাবমেরিন বিধ্বংসী হেলিকপ্টার, ফাইটার জেট, ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার বিমান ও বোমারু বিমান দেখা গিয়েছে। ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার প্লেনগুলিতে অত্যন্ত আধুনিক সোনার ও রাডার রয়েছে যার ফলে এরা সহজেই প্রতিপক্ষের সাবমেরিন খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়। তাছাড়া, শত্রুর রাডার সিস্টেম ও মিসাইল ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করার ক্ষমতাও রয়েছে এই বিমানের। এছাড়া, একাধিক মিসাইল ও বোমা নিয়ে ডুবোজাহাজ ধ্বংস করে বিপক্ষের নৌসেনাকে বেকায়দায় ফেলে দিতে পারে এই বিমানগুলি।
বিশ্লেষকদের মতে, তাইওয়ানের সামরিক ঘাঁটি ও সরঞ্জাম চিনের নিশানায় রয়েছে। দেশটির উপর চাপ তৈরি করতে ও হামলার পরিকল্পনা খতিয়ে দেখতেই এহেন অনুপ্রবেশ করছে চিনা যুদ্ধবিমানগুলি। এদিকে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে, চিনা বিমানের গতিবিধি রাডারে ধরা পড়তেই সমস্ত মিসাইল সিস্টেম সক্রিয় করে দেওয়া হয়। দ্রুত পাঠানো হয় যুদ্ধবিমানও।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই একটি চাঞ্চল্যকর অডিও প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দাবি করা হয়, গায়ের জোরে তাইওয়ান দখলের পরিকল্পনা করছে চিন (China)। অডিওয় এনিয়ে রীতিমতো আলোচনা করতে শোনা গিয়েছে চিনা কমিউনিষ্ট শাসক ও সেনা আধিকারিকদের একাংশকে। জাপানে অনুষ্ঠিত কোয়াড বৈঠকের আবহে এক চ্যানেলে ফাঁস হওয়া ওই অডিওকে ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। বিশ্লেষকদের ধারণা, ওই অডিও ক্লিপটি বিশ্বাসযোগ্য। তাইওয়ান দখল নিয়ে আলোচনাটি রেকর্ড করেছে চিনা ফৌজ। সেখান থেকেই কোনওভাবে তা লিক হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে লালফৌজের স্থাপনার পর এই প্রথম এহেন চাঞ্চল্যকর তথ্য লিক হয়েছে। চিনা আধিকারিকদের আলোচনায় বারবার শিল্পকেন্দ্র গুয়াংদং প্রদেশের পার্ল হারবার ব-দ্বীপ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উঠে এসেছে। কারণ, চিনা শিল্প ও ভারী কারখানার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে গুয়াংদং। সেখানেই চিনা টেক জায়ান্ট হুবেই ও টেনসেন্টের হেডকোয়ার্টার রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.