সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেসবুক-কর্তার পর এবার গুগল সিইও৷ মার্ক জুকারবার্গের পর মঙ্গলবার মার্কিন আইনসভার কর্তাব্যক্তিদের মুখোমুখি হলেন সুন্দর পিচাই৷ উত্তর দিলেন তাঁদের একাধিক তির্যক প্রশ্নের৷ যার মধ্যে অন্যতম হল, গুগলে ‘ইডিয়ট’ সার্চ করলেই কেন আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি? সূত্রের খবর, গুগল সিইওকে এই প্রশ্নটি করেন মার্কিন আইনসভার সদস্য জোই লফগ্রেন৷ যা শুনে প্রথমে খানিকটা ঘাবড়ে যান পিচাই৷ তাঁর শরীরী ভাষাই নাকি বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে, প্রশ্ন শুনে মনে মনে হাসছিলেন তিনি৷ তবে নিজেকে সামলে নিয়ে অবশেষে মার্কিন কংগ্রেসের সেই প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি৷ যা শুনে হতবাক অনেকেই৷
[ফেসবুকের হেডকোয়ার্টারে বোমাতঙ্ক, খালি করা হল বিল্ডিং]
জোই লফগ্রেনের প্রশ্নের কী উত্তর দিলেন পিচাই? গুগল সিইও জানান, গুগলে কোনও ছবি খোঁজার জন্য মূলত ২০০টি বিষয় কাজ করে৷ যায় মধ্যে অন্যতম, জনপ্রিয়তা ও প্রাসঙ্গিকতা৷ অর্থাৎ গুগলে কোনও বিষয় খোঁজ করলে বা অনলাইনে কোনও বিষয় সম্পর্কে মতামত দিতে গেলে, মানুষ যে শব্দের ব্যবহার বেশি করেন, সেই শব্দ বা বাক্যবন্ধ দিয়ে নাকি গুগলে সেটি পরিচিতি পায়৷ অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চান, এক্ষেত্রে ট্রাম্পর খোঁজ করতে গিয়েও বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ ‘ইডিয়ট’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং তা দিয়েই ট্রাম্পের খোঁজ করেছেন৷ পিচাইয়ের যুক্তি মেনে নিলে, সেই কারণেই ‘ইডিয়ট’ শব্দটি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে লিখলেই ট্রাম্পের ছবি ভেসে ওঠে৷ সূত্রের খবর, এই উত্তর শুনে চমকে ওঠেন জোই লফগ্রেন-সহ মার্কিন আইনসভার অন্যান্যরা৷ এরপর তাঁরা এই বিষয়ে বেশি কথা বাড়াননি৷ লফগ্রেন কেবল পিচাইকে বলেন, ”তাহলে এর পিছনে গুগলের কোনও কারসাজি নেই বলছেন?” উত্তরে পিচাই বলেন, ”না, নেই”৷ মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে গুগল সিইও-র এই উত্তর৷
এখানেই শেষ নয়, গুগলের তথ্যচুরি এবং চিনা সরকারের ‘সেন্সরশিপ’ নিয়েও মঙ্গলবার মার্কিন আইনসভার প্রশ্নের উত্তর দেন সুন্দর পিচাই। তাঁর সঙ্গেই ডাকা হয় ফেসবুক ও টুইটারের এগজিকিউটিভদেরও। গত অক্টোবরে গুগল ঘোষণা করেছিল, তারা তাদের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ‘হ্যাংআউট’ বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ, এই সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে ভোটের স্বার্থে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি গিয়েছে। এই অভিযোগ ওঠার পরই সুন্দর পিচাইকে মার্কিন সেনেট ডেকে পাঠায়। মঙ্গলবার সেনেট সুন্দরকে এ নিয়ে জেরা করে। পিচাইও জানিয়েছেন, ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে গুগল তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজাচ্ছে। এক বিবৃতিতে পিচাই জানিয়েছেন, ”তথ্যচুরির ঘটনা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে। এবং ব্যবহারকারীরা খুব শীঘ্রই জানতে পারবেন তাঁদের অ্যাকাউন্টের সেটিংস কত নিপুণভাবে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োগ করা হবে।” মার্কিন সেনেটে চিনে গুগলের প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে। বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয় ‘সার্চ ইঞ্জিন’ হিসেবে পরিচিত গুগল। শুধু সার্চ ইঞ্জিন হিসেবেই নয়, জি-মেল, ইউটিউব, গুগল ক্রোম, গুগল অ্যাডস-বিশ্বে সবেতেই এগিয়ে রয়েছে গুগল। কিন্তু চিনের মতো কমিউনিস্ট দেশে গুগল প্রবেশ করতে পারেনি। সে নিয়ে সুন্দর পিচাই হঠাৎ আগ্রহ প্রকাশ করলেন কেন, তা-ও জানতে চেয়েছে আইনসভা।
[সার্কে হাজির পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মন্ত্রী, প্রতিবাদে বৈঠক বয়কট ভারতের]
CONGRESS: “When I type in the word ‘idiot’ images of Donald Trump appear.”
GOOGLE: “Yeah, we told you it works.” #GoogleHearing pic.twitter.com/SMofyukcdd
— Mrs. Betty Bowers (@BettyBowers) December 11, 2018
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর থেকে পিচাই ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট সদস্যদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। গত সপ্তাহে তাঁকে হোয়াইট হাউস থেকে বৈঠক করে বেরোতে দেখা গিয়েছে। সেই বৈঠকে পিচাইয়ের সঙ্গে পৃথিবীর তাবড় টেক-জায়ান্টরাও উপস্থিত ছিলেন। জানা গিয়েছে, বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন দেশের উন্নয়নকে কীভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.