সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে বড় ধাক্কা খেলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে৷ আস্থা ভোটে পরাজয়ের মুখ দেখলেন তিনি৷ জয় হল তাঁর প্রতিপক্ষ রনিল বিক্রমসিংহের৷ ফলে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদেই থাকলেন বিক্রমসিংহ৷ গত মাসে, নির্দেশিকা জারি করে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা৷ কিন্তু বুধবার ভোটের ফলাফলের নিরিখে বাতিল হয়ে গেল প্রেসিডেন্টের সেই নির্দেশিকা৷
[ইজরায়েল ভূখণ্ডে রকেট হামলা হামাসের, পালটা সন্ত্রাসীদের ডেরায় হানা]
জানা গিয়েছে, এই আস্থা ভোটকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট৷ শুরু থেকেই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছিলেন উভয়পক্ষ৷ সূত্রের খবর, রাজাপক্ষের দল প্রথম থেকেই চাইছিলেন যাতে কোনওভাবেই এই আস্থা ভোট না হয়৷ কিন্তু স্পিকার কারু জয়সূর্য ঘোষণা করেন ধ্বনিভোটের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে এই আস্থা ভোটের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া৷ সেই মতো ধ্বনিভোটে তাঁদের মতামত জানান পার্লামেন্টের উপস্থিত সদস্যরা৷ পরাজয় নিশ্চিত জেনে, ফলাফল ঘোষণার আগে পার্লামেন্ট ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজাপক্ষে ও তাঁর দলের কয়েকজন সদস্য৷ এরপরেই ফলাফল ঘোষণা করেন স্পিকার এবং তাতে জয় হয় প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের৷ যদিও, এই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে মান্যতা দিতে নারাজ রাজাপক্ষের পুত্র নামাল রাজাপক্ষ৷ এই ভোটকে তাঁরা মানছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি৷
দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক ডামাডোল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়৷ প্রথমে সেই দেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহকে সরিয়ে দেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা৷ নয়া প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে৷ এখান থেকেই অশান্তির সূত্রপাত হয় দ্বীপরাষ্ট্রটিতে৷ এরপরেই পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের দাবিতে সরব হন বিক্রমসিংহ৷ কিন্তু গত শুক্রবার হঠাৎই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নয়া নির্বাচনের ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট৷ তিনি জানান, আগামী ৫ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কায় নয়া নির্বাচন হবে এবং ১৭ জানুয়ারি হবে নয়া পার্লামেন্টের গঠন৷ প্রথম থেকেই প্রেসিডেন্টের এই নির্দেশিকা মানতে নারাজ বিক্রমসিংহের দল৷ ফলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা৷ গতকাল, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খান শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা৷ কোর্টের নির্দেশে খারিজ হয়ে যায় তাঁর জারি করা দুটি নির্দেশিকা৷ এক, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া এবং দুই, নয়া নির্বাচনের ঘোষণা৷ শীর্ষ আদালতের অবশেষে স্বস্তি পান বিরোধীরা৷
[৫০০ কিমি গতির বুলেট ট্রেন, জাপানে ছুটছে চালকবিহীন ‘ম্যাগলেভ’]
২২৫ আসন বিশিষ্ট শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে বিক্রমসিংহের দলের আসন সংখ্যা ১০৬, অন্যদিকে রাজাপক্ষে ও সিরিসেনার দলের সম্মিলিত আসন সংখ্যা মাত্র ৯৫। এতদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহের দলের সঙ্গে জোট করে সরকারে ছিল সিরিসেনার দল৷। কিন্তু গত মাসে জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। তারপরই রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন সিরিসেনা। একসময় শ্রীলঙ্কার এই রাজাপক্ষেরই মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ছিলেন সিরিসেনা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য রাজাপক্ষের সঙ্গ ত্যাগ করেন তিনি। অনেকের মতে, এবার রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করে সেই ঋণই শোধ করার চেষ্টা করছিলেন সিরিসেনা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.