সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আরও বিপাকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদ। জিহাদের নামে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে হাফিজ। আর সেকারণেই তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। বিচারবিভাগীয় রিভিউ বোর্ডকে এমনটাই জানাল পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শনিবার মামলার শুনানি চলাকালীন মুম্বই হামলার মূল চক্রী দাবি করেন, বিনা কারণে অন্যায়ভাবে তাকে এবং তার চার সঙ্গীকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। কাশ্মীরিদের সাহায্যে যাতে তিনি কিছু করতে না পারেন, সেজন্যই এমনটা করা হয়েছে। এর পাল্টা হিসেবেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের বিচারবিভাগীয় বোর্ডকে বলা হয়, অন্য কোনও কারণে নয়। জিহাদের নামে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্যই হাফিজ ও তার ৪ সঙ্গীকে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে।
কেন হাফিজ ও তার চার সহযোগীকে আটকে রাখা হয়েছে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও চেয়েছে পাক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এজাজ আফজল খান, লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি আয়েশা এ মালিক ও বালুচিস্তান হাইকোর্টের বিচারপতি জামাল খান মনদোকহলি-র রিভিউ বোর্ড। এই মামলার আগামী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৫ মে। সেদিন অ্যটর্নি জেনারেলকে উপস্থিত থাকারও নির্দেশ দিয়েছে। এদিন আদালত চত্বরে হাফিজের সমর্থনে প্রচুর লোক জমা হয়েছিল। এর আগে গত বৃহস্পতিবার লাহোর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে প্রশ্ন তুলেছিল, রিভিউ বোর্ডের সামনে না এনে হাফিজ সইদ ও তার চার সহযোগীর গৃহবন্দির মেয়াদ কেন বাড়াল পাক সরকার? আর এদিন তাই কড়া নিরাপত্তায় হাফিজ সইদ এবং তার চার সহযোগী জাফর ইকবাল, আবদুল রহমান আবিদ, আবদুল্লাহ উবেইদ এবং কাজি কাশিফ নিয়াজকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
মামলা চলাকালীন রিভিউ বোর্ডকে হাফিজ জানায়, ‘আমার বিরুদ্ধে সরকার যে অভিযোগ আনছে, সেটা কখনই প্রমাণিত হয়নি। কাশ্মীর ইস্যুতে মুখ খোলার জন্য এবং সে ব্যাপারে সরকারের নরম মনোভাবের সমালোচনা করার জন্য আমার এবং আমার সংগঠনের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে।’ এর পাশাপাশি যে নির্দেশের মাধ্যমে পাঞ্জাব সরকার তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছে, সেই নির্দেশও সরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানান হাফিজ। রাষ্ট্রসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মহলের চাপেই মুম্বই হামলার মূল চক্রী জামাত–উদ–দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদকে আটক করা হয়েছে, রিভিউ বোর্ডকে একথা জানান পাক সরকারের এক আধিকারিক।
এর আগে রাষ্ট্রসংঘের বহু নির্দেশ সত্ত্বেও হাফিজ এবং তার সংগঠনকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করতে নারাজ ছিল পাকিস্তান। এমনকি, উরি, পাঠানকোটে হামলার পরও ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির মূলে ছিল হাফিজকে আড়াল করা। কিন্তু জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় পাক সরকার। পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে পাকিস্তানকে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই হুমকির পরেই হাফিজকে গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্ত নেয় পাক প্রশাসন। ৩০ জানুয়ারি তাকে গৃহবন্দি করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.