সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমেই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছে লালফৌজ। দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত দ্বীপে বোমারু বিমান ও ফাইটার জেট মোতায়েন করেছে চিন। ভারতকে সতর্ক করে এমনটাই জানিয়েছে ভিয়েতনাম।
সদ্য ভারতের বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম সানহ চাউ। দীর্ঘ আলোচনায় দক্ষিণ চিন সাগরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত জানান, বিতর্কিত জলরাশিতে ক্রমে গতিবিধি বাড়িয়ে তুলছে লালফৌজ। সম্প্রতি সেখানে বোমারু বিমান ও ফাইটার জেট মোতায়েন করেছে বেজিং। তিনি আরও জানান, এই বিষয়ে ভারতের সঙ্গে মজবুত সামরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী ভিয়েতনাম। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ চিন সাগরে তেল ও গ্যাস উৎপাদনে ভূমিকা বাড়িয়ে তোলার জন্য ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত।
ভিয়েতনামের এই আশঙ্কা যে অমূলক নয় তা স্পষ্ট করে সম্প্রতি চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন ফৌজের আগ্রাসন, বিশেষ করে আমেরিকার যুদ্ধবিমানবাহী রণতরীগুলিকে রুখে দিতে সামরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলছে চিন। জানা গিয়েছে, বিতর্কিত পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড় দ্বীপ উডি আইল্যান্ডে H-6J বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে চিন। উল্লেখ্য, ওই পারাসেল দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি করে ভিয়েতনামও। বিতর্কিত অঞ্চলে একতরফাভাবে সামরিক পরিকাঠামো নির্মাণ করে দেশের সর্বভৌমত্বে আঘাত করছে চিন বলে আগেও বহুবার তীব্রই প্রতিবাদ জানিয়েছে ভিয়েতনাম।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসেই নয়াদিল্লি সাফ জানিয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগর কারও একার সম্পত্তি নয়। কেন্দ্রে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোড়াল করেছে নয়াদিল্লি। লাদাখ ইস্যুতে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। লালফৌজের আগ্রাসনের বরুদ্ধে প্রয়োজনে ফৌজ পাঠিয়ে ভারতকে মদত করার আশ্বাসও দিয়েছে ওয়াশিংটন। এহেন সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতও সাফ করে দিতে চাইছে যে, চিন যদি আগ্রাসন না থামায়, তাহলে দক্ষিণ চিন সাগরে সরাসরি আমেরিকার পাশেই দাঁড়াবে দেশ। এছাড়া, ন সাগরে আধিপত্য নিয়ে চিনের লড়াই সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, জাপান এবং সুদূর ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গেও। তাদের ভূখণ্ড থেকে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপেও মাছ ধরার অধিকার চাইছে চিন। পালটা বেজিংকে শায়েস্তা করতে সেখানে দুটি যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে আমেরিকা। সব মিলিয়ে দক্ষিণ চিন সাগর ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.