সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনাজয়ীরা কি সম্পূর্ণ সুস্থ? সকলের অলক্ষ্যে তাঁদের শরীরে থেকে যাচ্ছে না তো মারণ ভাইরাসের কোনও প্রভাব? সম্প্রতি জানা গিয়েছে করোনাজয়ীরা হারিয়ে ফেলছেন তাঁদের ঘ্রাণশক্তি। ফলে করোনা মুক্ত হয়েও তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এক অদৃশ্য প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে।
গত মাসের শুরুতেই উপসর্গহীন করোনার সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। অনেক আক্রান্তরা আবার হারিয়ে ফেলছিলেন ঘ্রাণশক্তিও। পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয় যে, ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলাও করোনা সংক্রমণের এক নতুন উপসর্গ। এরপরই সামনে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। করোনামুক্ত হলেও আক্রান্তরা নাকি হারিয়ে ফেলছেন তাঁদের এক ইন্দ্রিয় শক্তি, অর্থাৎ ঘ্রাণশক্তি। প্যারিসের অ্যানসমিয়া সংস্থার সভাপতি জিন মাইকেল মেইলার্ডের কথায় (Jean-Michel Maillard), “করোনা থেকে মুক্তির পরও প্রকৃত অর্থে সুস্থ হচ্ছেন না করোনাজয়ীরা। ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলছেন তাঁরা। ফলে যত জীবন বেঁচে থাকবেন ততদিনই এই অদৃশ্য প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে তাঁদের। ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম অ্যানসমিয়া (Anosmia)। যার জেরে কোনও ব্যক্তি পুরোপুরি ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন।” এমনকি এই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই বলেও জানান তিনি। ফলে সকালে উঠে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মিলবে না কোনও গন্ধ। প্রিয় ফুল ঘরে সাজিয়েই শুধুমাত্র দেখেই খুশি হতে হবে, সেই ফুলের গন্ধ মন মাতাবে না করোনাজয়ীদের।
তবে যদি কেউ ভেবে থাকেন যে এতে আর এমন কী ক্ষতি, তাহলে বলা ভাল এতে ভয়ংকর বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন আপনি। কারণ, করোনামুক্ত কোনও ব্যক্তিই পরবর্তীকালে কোনও গ্যাসের গন্ধ, পোড়া গন্ধ বা অন্য কোনও সুগন্ধীও আর উপলব্ধি করতে পারবেন না বলে দাবি করেন অ্যানসমিয়া সংস্থার সভাপতি জিন মাইকেল মেইলার্ড। সেক্ষেত্রে খাওয়ার সময়েও সেই ব্যক্তির ভিন্ন অভিজ্ঞতাই হবে। খাবারের স্বাদ পেলেও গন্ধের ও কোনও অস্তিত্ব থাকবে না তাঁর জীবনে।
প্রশ্ন হল সব করোনা আক্রান্তরাই কী করোনামুক্তির পর এই রোগের শিকার হতে পারেন? মাইকেল মেইলার্ডের কথায়, “না অ্যানসমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার একাধিক কারণ হতে পারে। যেমন- জন্মগত কোনও ব্যক্তির নাকের সমস্যা, ডায়াবেটিস, অ্যালঝাইমার, পারকিনসন-সহ একাধিক রোগের পর কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সেই ব্যক্তির চিরতরে ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকবে। তবে করোনামুক্ত হলেও ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফলার পর সেই ব্যক্তিদের জীবনে অবসাদও বাড়তে থাকে। ফলে একেবারেই বদলে যেতে পারে সেই ব্যক্তিদের জীবনের গতি-প্রকৃতি।” এরজেরে পরবর্তীকালে সেই ব্যক্তিদের মানসিক (psychological) সমস্যাও দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করেন মেইলার্ড।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.