সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “জইশ-ই-মহম্মদ, জামাত-উদ-দাওয়া ও লস্কর-ই-তইবা হল পাকিস্তান সেনার সন্তান। বিশ্বের চোখে ধুলো দিতেই এই জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে লোক দেখানো ব্যবস্থা নিচ্ছে ওরা।” নিজের দেশের সেনাবাহিনী সম্পর্কে কটাক্ষ করে এই কথাই বললেন মুত্তাহিদা কওমি আন্দোলনের জনক আলতাফ হুসেন। তাঁর দাবি, এই সমস্ত জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে কোনওদিনই সত্যিকারের ব্যবস্থা নিতে পারবে না পাকিস্তান। জঙ্গিদের আটক করার নামে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে গোটা বিশ্বের সামনে নাটক করছে ইমরানের সরকার।
[রাষ্ট্রসংঘে আবেদন খারিজ, নিষিদ্ধ জঙ্গি তালিকাতেই থাকছে হাফিজ সইদ]
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তান সেনার সঙ্গে ধর্মীয় জেহাদি সংগঠনগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে এসেছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। আর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনামূলক পরিস্থিতিকে অন্য যুদ্ধ শুরুর সূচনা বলেও জানিয়েছিলেন।
[ভারতে হামলা চালাতে জইশকে ব্যবহার করে আইএসআই, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মুশারফের]
ওই সাক্ষাৎকারে দু’দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্বের সামনে তুলে ধরার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। বলেন, “বিশ্বের সামনে কাশ্মীরের পরিস্থিতি তুলে ধরতে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো বিভিন্ন খবর করে। কিন্তু, পাকিস্তানের মাটিতে থাকা মুহাজির, বালোচ, পাশতুন, সিন্ধ্রি, গিলগিটি-সহ বঞ্চিত সম্প্রদায়গুলির মানুষের উপর পাকিস্তানের সেনার ভয়াবহ অত্যাচারের কথা ভুলেও প্রচার করে না ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। করাচিতে যখন হাজারেরও বেশি মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হাজারেরও বেশি মানুষ রাতারাতি উধাও হয়ে যায় বা প্রচুর মানুষকে বিনা কারণে জেলে আটকে রাখা হয়। কিংবা বালোচিস্তানের রাস্তায় যখন প্রতিদিন নিরীহ বালোচদের ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ উদ্ধার হয় তখনও কোন খবর করে না তারা। বিষয়টি খুব অবাক লাগে আমার।”
[‘আল্লাহকে ভয় করো’, মৃত্যুর জল্পনা উড়িয়ে অডিও বার্তায় তোপ মাসুদের]
১৯৮৪ সালে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) নামে পাকিস্তানে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন করাচির বাসিন্দা আলতাফ হুসেন। কিন্তু, ২০১৫ সালে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের একটি আদালত ষড়যন্ত্র, হিংসামূলক কাজে উসকানি এবং দেশ ও সেনাবাহিনী বিরোধী বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত করে। এই অপরাধের জন্য তাঁকে ৮১ বছরের জন্য জেলে পাঠানোর নির্দেশও দেয়। এরপরই পাকিস্তান থেকে পালিয়ে ইংল্যান্ডে চলে যান আলতাফ। বর্তমানে সেখান থেকেই পাকিস্তানের কাছে ব্রাত্য থাকা মুহাজিরদের জন্য লড়াই সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পাক-অধিকৃত গিলগিট ও বালোচিস্তানের মানুষদের স্বাধীনতার লড়াইয়ে সহযোগিতা করছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.