সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও থামেনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আর কামানের গর্জনের মধ্যেই ঐতিহাসিক ইউক্রেন সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিয়েভে পৌঁছে বৈঠক করেছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে। ভারত নিরপেক্ষ নয়, শান্তির পক্ষে। আর এই শান্তি ফেরাতে জেলেনস্কিকে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসার ‘কূটনৈতিক’ পরামর্শ দিয়েছেন মোদি। যদি দুদেশ বৈঠকে বসে তাহলে সবরকম সাহায্য করবে দিল্লি। ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানিয়ে কথা দিয়েছেন নমো।
চলতি বছরেই রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন মোদি। আলিঙ্গন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। যা নিয়ে নমোকে তোপ দেগেছিলেন জেলেনস্কি। কিন্তু এই সফরে মোদি-ম্যাজিকে মুগ্ধ তিনি। অতীতের তিক্ততা ভুলে যুদ্ধ বন্ধে তাঁর ভরসা মোদিই। শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যুদ্ধের সমস্ত ক্ষত চিহ্ন ঘুরে দেখেন নমো। স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে বেদনা প্রকাশ করে নিষ্পাপ শিশুদের যুদ্ধের বলি হওয়ার জন্য। এর পরই বৈঠকে বসেন দুই রাষ্ট্রনেতা। রয়টার্স সূত্রে খবর, আলোচনায় ভারতের অবস্থান নিয়ে মোদি জানান, “আমরা নিরপেক্ষ নই। প্রথম থেকে আমাদের একটাই পক্ষ। আমরা সব সময় শান্তির পক্ষে। আমরা বুদ্ধের দেশ থেকে এসেছি। যেখানে যুদ্ধের কোনও স্থান নেই। আমাদের দেশ মহাত্মা গান্ধীর দেশ। যিনি গোটা বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিয়েছেন।”
যুদ্ধক্ষেত্রে কখনও সমাধানের পথ মেলে না। বৈঠক ও কূটনীতির মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। ভারত এই বিদেশনীতিতেই বিশ্বাসী। আর এই অবস্থান থেকেই এদিন জেলেনস্কিকে পরামর্শ দিয়ে মোদি বলেন, “এই যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক প্রয়োজন। আপনি যদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেন তাহলে সাহায্য করবে ভারতও। আমি বন্ধু হিসাবে কথা দিচ্ছি। পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতেও আমি বলেছিলাম, যুদ্ধক্ষেত্রে কখনও কোনও কিছুর সমাধান মেলা সম্ভব নয়। ভারত ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। রাষ্ট্রসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে সব দেশের ক্ষেত্রেই আমাদের এটা মেনে চলা উচিত।”
বিশ্লেষকদের মতে, মোদির পরামর্শে যদি আলোচনায় বসে ইউক্রেন ও রাশিয়া তাহলে তা বিরাট কুটনৈতিক জয় হবে। পুতিনের সঙ্গে মোদির সখ্যের কথা কারও অজানা নয়। এদিকে, তিক্ততা ভুলে জেলেনস্কির কাছে মোদিই ‘শান্তির দূত’। ফলে ভারসাম্যের খেলা খেলে যদি দিল্লি এই যুদ্ধের বন্ধের পথ খুলে দিতে পারে তাহলে তা বিভিন্ন দেশের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা হবে। এই সফরে মোদির সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। জানা গিয়েছে, ভারত ও ইউক্রেনের মধ্যে কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মোদির রুশ সফর নিয়ে খানিকটা অসন্তোষ পুষে রেখেছিল আমেরিকা, ইউক্রেন সফরে তাও মিটেছে। আমেরিকাও আশাপ্রকাশ করেছে যে, মোদিই পারবেন দুদেশের যুদ্ধ থামাতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.