সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুক্রবারের ভয়ংকর ঘটনার পর থেকে স্তব্ধ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ। সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু বন্দুকবাজের চোখ রাঙানির জন্য তো আর শহর থেমে থাকতে পারে না। আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ক্রাইস্টচার্চের বাসিন্দারা। আর তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় শিখ সম্প্রদায়।
নিরাপদ দেশ হিসেবে সর্বদা শিরোনামে থাকা নিউজিল্যান্ডই এখন ত্রস্ত। শহরের বুকে দু’টি মসজিদে ঢুকে নির্বিচারে গণহত্যা চালায় অস্ট্রেলিয়ার যুবক ব্রেন্টন হ্যারিসন টারান্ট। সেই ঘটনার পর নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে সেখানকার শিখ সম্প্রদায়। তাঁদের সবরকমভাবে সাহায্যের জন্য বদ্ধপরিকর স্থানীয় শিখরা। মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুরোধে অকল্যান্ডের দ্য গুরুনানক ফ্রি কিচেন নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি আক্রান্তদের সাহায্যের জন্য ভলান্টিয়ার পাঠায়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পরিবারের সদস্যদের স্থানান্তরিত করা থেকে নিহতদের সমাধিস্ত করা, শেষকৃত্যে উপস্থিত লোকেদের জন্য লঙ্গরখানার ব্যবস্থা, সবই করে সংস্থাটি। তাদের এমন উদ্যোগের জন্য ফেসবুকে শিখদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে মুসলিম সম্প্রদায়।
শুক্রবার শহরের দু’টি মসজিদে ঢুকে ৫১ সেকেন্ডের মধ্যে ৪৯ জনের প্রাণ কেড়ে নেয় বন্দুকবাজ ২৪ বছরের অস্ট্রেলীয় যুবক। ফেসবুকে তার সরাসরি সম্প্রচার করে গোটা বিশ্বে আতঙ্ক তৈরি করে। তাতেই ক্ষান্ত হয়নি ক্রাইস্টচার্চের বন্দুকবাজ। হামলার কিছুক্ষণ আগেই ইন্টারনেটে ৭৪ পৃষ্ঠার একটি ইস্তাহার পোস্ট করে সে। যার ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য, মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা ও নিজের কট্টরপন্থী মতাদর্শের কথা। এই মতাদর্শের মাধ্যমে ‘নতুন সমাজ গড়ার লক্ষ্যে পদক্ষেপ’ করার কথা বলা হয়েছে। ইউরোপের মাটি থেকে বিদেশিদের তাড়াতে এবং ইউরোপের লক্ষ লক্ষ শ্বেতাঙ্গ মানুষকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করার কথাও বলা হয়েছে টারান্টের ইস্তাহারে। পরে অবশ্য সেই ফেসবুক ও টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
নিউজিল্যান্ডের মসজিদে হামলা চালানোর ঘটনায় ধৃত অস্ট্রেলিয়ান যুবককে শনিবার সকালে ক্রাইস্টচার্চ হাই কোর্টে তোলা হয়। আদালতে শুনানির সময় যাতে কিছু বলতে না হয়, তাই নিজের ঠোঁটও কেটে ফেলেছিল ধৃত ব্রেন্টন হ্যারিসন টারান্ট। কোনও শুনানি ছাড়াই তাকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.